![](https://alochitokantho.com.bd/wp-content/uploads/2022/02/273755793_3036797836573272_4009045104428328161_n-1024x455.jpg)
![](http://alochitokantho.com.bd/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারীতে সেচ ব্যবস্থাপনা নীতিমালার বাইরে অগভীর নলকুপ ব্যাঙের ছাতার মতো স্থাপন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের বিরুদ্ধে। সরেজমিনে সেচ সংযোগকারীদের বিএডিসির লাইসেন্সকৃত জমির দাগ, খতিয়ান, নশকা পর্যবেক্ষণ করলে বেড়িয়ে আসবে দুর্নীতির চিত্র। অপরদিকে নাগেশ্বরী বিএডিসির উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া নুরুল সেচ আইন অমান্য করে অর্থের বিনিময়ে নাগেশ্বরী-ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় ৯৯৯টি অনুমোদনকৃত অগভীর নলকূপের লাইসেন্সের মধ্য প্রায় ৮০% লাইসেন্স সেচ নীতিমালার বহির্ভূতের অভিযোগ রয়েছে। তথ্যমতে বিধিবর্হিভূত ভাবে সেচ লাইসেন্স প্রদান এবং আবাসিক মিটারের মাধ্যমে যত্রতত্র মটর স্থাপন করায় বিএমডিএ’র গভীর নলকূপগুলি বন্ধের পথে। লিখিত অভিযোগ সূত্রমতে, কুড়িগ্রাম লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী জোনাল অফিস সেচ বিধিমালা বহির্ভূত, ভূয়া কাগজপত্র, বিএমডিএ সংলগ্ন ও নির্দিষ্ট দূরত্ব অমান্য করে নাগেশ্বরীর ডিজিএম, সহকারী জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার রতন মিয়া এবং ভুরুঙ্গামারীর ডিজিএম মোটা অঙ্কের টাকা বিনিময়ে অগভীর নলকুপ ব্যাঙের ছাতার মতো যত্রতত্র স্থাপন করে আসছে। অধিকাংশই সেচ সংযোগ ভূয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন না করে বাঁশের খুটিতে তার টানিয়ে বিপজ্জনকভাবে সেচ চালিয়ে আসায় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটাসহ বিদ্যুৎ তারে জ্বড়িয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে। নাগেশ্বরীর বেরুবাড়ী ইউনিয়নে অধিকাংশই ভূয়া কাগজপত্রে সেচ লাইসেন্স ও নির্দিষ্ট দূরত্ব অমান্য করে নাগেশ্বরী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিস সেচ বিধিমালা বহির্ভূত করে অর্থের বিনিময়ে চলতি বছর সেচ সংযোগ দিয়ে আসছেন। এদের মধ্য চর বেরুবাড়ীর মদিনার পুত্র বাদশা, ছাদেম আলীর পুত্র গাজি রহমান, কাদেরের পুত্র নায়েব আলী, খালেকের পুত্র মফিজুল ইসলাম, জুরান আলীর পুত্র আব্দুল খালেক, কলিম উদ্দিনের আব্দুল মালেক, বলরামপুর এলাকার আব্দুল হামিদের পুত্র আব্দুল খলিল, প্রাণ কৃষ্ণ সেনের পুত্র রজনি কান্ত সেন, এনাতুলার পুত্র শাহানুর আলী সেচ সংযোগ অবৈধভাবে দেয়া হয়েছে। রামখানা ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেষা ঠোস চারিদিক গোলাকার প্রসাদের কুটি এলাকায় ৮০পরিবারের ঘরবাড়ি ৯০একর জমিতে ৭জন লাইসেন্স প্রাপ্ত খলিলুর রহমানের নামে ২টি থেকে ২শত ফিড দুরে তৈয়ব আলী, ছলিম উদ্দিন, মন্টু মিয়া, আলতাফ ও আব্দুর রউফকে অবৈধ লাইসেন্স প্রাপ্তদের এবং বিভিন্ন অঞ্চলে বিএমডিএর গভীর নলকূপের এরিয়ার মাঝে অবৈধভাবে সেচ সংযোগ দেয়া হচ্ছে। বিএমডিএ’র গভীর নলকূপের অপারেটর মোঃ আবু তাহের, মোঃ আব্দুল খালেক, মোঃ সেলিম আহম্মেদ বাবু, মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিকসহ একাধিক অপারেটর জানায় আবাসিক মিটারের মাধ্যমে সেচ মটর চালানোর জন্য গভীর নলকূপের স্কীমে কমে যাচ্ছে, বিদ্যুৎ লাইনে লো-ভেল্টেজ সৃষ্টি হচ্ছে এবং সুষ্ঠভাবে সেচ চালানো যাচ্ছেনা এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে একাধিক অভিযোগ প্রদান করা হলেও কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না এতে আমরা নলকূপ চালিয়ে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। ভুরুঙ্গামারী বিদ্যুৎ অফিসের আওতায় কেদার ইউনিয়নে ১৬৫, কচাকাটা ইউনিয়নে ১০৭, বল্লভেরখাস ইউনিয়নে ৯৩, নারায়নপুর ইউনিয়নে ৫৬টির অধিকাংশই সেচ লাইসেন্স নীতিমালার বহির্ভূত। কেদার ইউনিয়নের বালাবাড়ী গ্রামে একই পরিবারের আমজাদ আলীর নামে একটি ও তার স্ত্রী জাহানারা বেগমের নামেও একটি, জোনাব আলীর পরিবারে চারটি, আল আমিনের নামে একটি অবৈধ নলকূপের সেচ লাইসেন্সসহ বিভিন্ন এলাকায় সেচ সংযোগ দেয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ অফিস এখন দালালের নৈরাজ্য। বেরুবাড়ী ইউনিয়নের শালামারা টুপামারী গ্রামের আনিছুর রহমান জানান, আমার বৈধতা থাকার পরেও লাইসেন্স পাইনি। আমার জমি থেকে ১৫০ ফুট দুরে শামছুল হক প্রধানকে অবৈধভাবে সেচ সংযোগ দেয়া হয়। শামছুল হক প্রধান সেচ নিয়ে ৪শত ফুট তার বাঁশের খুটিতে করে ঝুলিয়ে সেচ মটর চালাচ্ছেন। ইউএনও বরাবরে অভিযোগ করে তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলেও বিচার থেকে বঞ্চিত। ভুক্তভোগী সাইফুর রহমান, মাসুম, জোনাব আলীসব অনেকে অভিযোগ করে বলেন, অবৈধভাবে এতো লাইসেন্স সরেজমিনে না দেখে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সেচ নীতিমালা অমান্য করে অর্থের বিনিময়ে সেচ সংযোগ দিয়ে আসছে। অনেক সেচ সংযোগকারী নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন না করে বাঁশের খুটিতে তার টানিয়ে বিপজ্জনকভাবে সেচ চালাচ্ছে। এতে বিদ্যুৎ তারে জ্বড়িয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে। সরেজমিনে সেচ সংযোগকারীদের বিএডিসির লাইসেন্সকৃত জমির দাগ, খতিয়ান, নশকা পর্যবেক্ষণ করলে বেড়িয়ে আসবে দুর্নীতির চিত্র। বিএডিসির উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া নুরুল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের কিছু ত্রুটি ও ভুলের জন্য সেচ লাইসেন্সে কিছু সমস্যা আছে। আমি সে সব সেচ দেখছি। অফিসে আসেন একটু কথা বলবো। কুড়িগ্রাম লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুত সমিতির নাগেশ্বরী জোনাল অফিসের ডিজিএম আতিকুর রহমান জানান, সেচ নীতিমালা বহির্ভূত ও ভূয়া কাগজপত্র দেখবে বিএডিসি। বিএডিসির লাইসেন্স প্রাপ্তদের আমরা সেচ সংযোগ দিচ্ছি। অভিযোগ পেলে আমরা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবো। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি নুরুল আহমেদ মাছুম বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কুড়িগ্রাম লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মহিতুল ইসলাম বলেন, সেচ সংযোগ প্রদানে অনিয়ম করে থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কার্যক্রম ও পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (কারিগরী) সৈয়দ মাহাবুবুর রহমান বলেন, আপনারা পত্রিকায় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করেন। সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কৃষি মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) ওয়াহিদা আক্তার বলেন, সেচ নীতিমালা বহির্ভূত করা হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।