লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
হবিগঞ্জ শহরের কনসালটেন্ট ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে জাল এক্সরে রিপোর্ট প্রদান করায় এমডিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছে। আদালতের নির্দেশে বাহুবল থানার এসআই ফুয়াদ আহমেদ বাদি হয়ে চুনারুঘাট উপজেলার জুরিয়া বড়বাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল খালেকের পুত্র কনসালটেন্ট ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের এমডি ফারুক মিয়া, ছোট বহুলা গ্রামের রহমত আলীর পুত্র ম্যানেজার জুয়েল মিয়া, মার্কেটিং অফিসার শাহিন মিয়া, বাহুবল উপজেলার পূর্ব জয়পুর গ্রামের মৃত জাফর উল্লার পুত্র রোগী আকলাছ মিয়া ও সাদেক মিয়াসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করেন।
জানা যায় হবিগঞ্জ শহরের সদর হাসপাতালের নিকট বিলাস বহুল কনসালটেন্ট ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া এক্সরে রিপোর্ট দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি ও ক্ষতিগ্রস্ত করে আসছে। বিনিময়ে তারা মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। এসব এক্সরে রিপোর্টের কারণে অনেক নিরপরাধ লোককে হাজত বাস করতে হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর বাহুবল উপজেলার পূর্বজয়পুর গ্রামের আখলাছ মিয়া বাদি হয়ে শিক্ষানবীশ আইনজীবি মিজানুর রহমান ও জাহাঙ্গীর আলমসহ আরও বেশ কয়েকজনকে আসামি করে জখমীদেরকে গ্রিভিয়াস জখম দেখিয়ে মামলা করেন।
এরপর মামলার আসামি জাহাঙ্গীর মিয়া আদালতে হাজির হয়ে দরখাস্ত দিয়ে জখমীদের ইনজুরি জাল ও ভূয়া বলে অবগত করেন। আদালত এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বাহুবল থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। পুলিশ তদন্ত শেষে জখমী সাদেক মিয়া, আকলাছ মিয়াসহ অন্যান্যদের এক্সরে রিপোর্ট (ফিলিম) জাল ও ভূয়া বলে উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেন। বিচারক প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে জালিয়াত ও প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর জন্য বাহুবল থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশ পেয়ে এসআই ফুয়াদ আহমেদ বাদি হয়ে উল্লেখিতরাসহ জালিয়াতচক্রের বিরুদ্ধে ৪৬৭/ ৪৬৮/ ৪৭১/ ৪২০/১০৯ প্যানাল কোডের ধারা মতে মামলা রুজু করেন। যার নং-১১, তাং-১৭-১২-২০২১ইং।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি হবিগঞ্জ শহরের পুরাতন হাসপাতাল কোয়ার্টার এলাকার ইউনাইটেড জেনারেল হাসপাতালে এরকম একটি ঘটনা ঘটায় প্যাথলজি ও টেকনিশিয়ানকে গ্রেফতার করে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে তবে ওই হাসপাতালের মালিক ও আসামি নাজমুল হক এখনও পলাতক রয়েছেন।
তবে এ বিষয়ে বাহুবল থানার ওসি রকিবুল ইসলাম খান জানান, বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ মতে প্রতারক ও জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এ ছাড়া ওই কনসালটেন্ট এর এমডি ফারুক মিয়া জানান, আমাদের রিপোর্ট সঠিক। যদি কেউ বাহির থেকে জালিয়াতি করা হয়ে থাকে তবে আমার জানা নেই।