মোঃ মজিবর রহমান শেখ,,
শীতের তীব্রতায় হিমালয়ের কোলঘেঁষা দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও জেলায় শীত নিবারণের উপকরণ তৈরির করছে লেপ-তোষক কারিগররা। শীত মানেই প্রশান্তির ঘুমের জন্য সবচেয়ে উপযোগী ঋতু। আর এই শীত জেঁকে বসার এখন লেপ-তোষক তৈরির কাজ করছে কারিগররা। এ মাসেই ঠাকুরগাঁও জেলায় শীতের আমেজ অনেকটা শুরু হয়েছে। ভোররাতে ঠান্ডা আর সকালের শীত শীত ভাব বলে দিচ্ছে দরজায় কড়া নাড়ছে শীত । সেই সঙ্গে ভোরের শিতের ভেজা মাঠের সবুজ ঘাসের গায়ে লেগে থাকা শিশির বিন্দুর ঝলকানি শীতের সকালের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে জেলাবাসীকে। ষড়ঋতুর বাংলাদেশে শীতের শীতকালে হওয়ার কথা থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তা ঋতুর সাথে তাল মিলছে না। গ্রাম বাংলায় আজও প্রবাদ আছে আশ্বিনে গা করে শিন-শিন। কিন্তু প্রকৃতির লীলা খেলায় সকাল হলেই ঘন কুয়াশার আচ্ছন্ন আর শীতের আমেজ দেখা যাচ্ছে। আবার সূর্য ওঠার কয়েক ঘণ্টার পরেই রোদের তাপে শীত কুয়াশায় ঢেকে যায় । চরম শীত ও কনকনে ঠান্ডায় এলাকার মানুষের দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে । এদিকে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে প্রায় সারারাত ধরেই মাঝারি ধরনের শীতের কারণে অনেক বাসা-বাড়িতে শীত নিবারণের জন্য কাঁথা ও কম্বল ব্যবহার শুরু হয়েছে তবুও শীত নিবারণ করতে পারছেন না মানুষ । আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে শিশু ও বৃদ্ধদের শীতজনিত নানা ধরনের রোগের পাদুর্ভাব কিছুটা দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলার ৫ টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, কনকনে শীত জেঁকে বসার আগেই তা মোকাবিলা করার জন্য অধিকাংশ হাট বাজারের লেপ তোষকের কারিগর ও পাড়া-মহল্লার মানুষ বাড়িতে বাড়িতে লেপ-তোষক তৈরি করছে। দিন যতই গড়াচ্ছে শীত ততই বেশি পড়ার আশঙ্কায় ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলা সহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষেরা নতুন নতুন লেপ তৈরি করছে। লেপ তৈরির কারিগররা শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে অর্ডার নিলেও যথা সময়ে সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে। ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী , লাহিড়ী, রুহিয়া, লোহাগাড়া,কাঠালডাঙ্গী বাজার-রাণীশংকৈল, নেকমরদ, গড়েয়া বাজার সহ ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিত আর কারিগরদের ধুনুক দিয়ে তুলা ফাটানোর সরগরমেই যেন বলে দিচ্ছে লেপ-তোষক তৈরির ধুম পড়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলা পৌরসভা এলাকার লেপ-তোষক ব্যবসায়ী ইউনুস আলী জানান,এ সময়ে অনেকে ক্রেতারা নিজ নিজ পরিবারের সদস্যদের জন্য লেপ-তোষক, বালিশ সহ শীতবস্ত্র বানাতে দিচ্ছেন ও অনেকেই আবার বানিয়ে নিয়েছেন। তবে লেপ-তোষক তৈরির কাঁচামাল তুলা ও কাপড়ের দাম একটু বেশি। তিনি আরও বলেন, বাজারে প্রতি কেজি গার্মেন্টস তুলা (সাদা) ৭০ থেকে ১৩০ টাকা, গার্মেন্টস তুলা (কালো) ৬০ থেকে ৮০ টাকা, শিমুল তুলা ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, কার্পাস তুলা ২৩০ থেকে ৩০০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার সালন্দর চৌধুরীহাট ,পীরগঞ্জ উপজেলার লোহাগড়া বাজারের ব্যবসায়ী প্রদীপ রায় জানান, এ বছর লেপ-তোষক তৈরিতে গত বছরের চেয়ে ৩ থেকে ৪ শত টাকা বেশি লাগছে। তাছাড়া একটি তোষক ১ হাজার ৫ শত থেকে ২ হাজার ৬ শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মোঃ মজিবর রহমান শেখ