সমস্ত ষড়যন্ত্র উপড়ে ফেলে আজ পদ্মাসেতু হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘পদ্মাসেতু একটি স্বপ্নের সেতু ছিলো, সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠকন্যা শেখ রেহানাসহ পদ্মাসেতুর এপার থেকে ওপারে গাড়ি চালিয়ে গেছেন, আবার গাড়িতে এপারে এসে গণভবনে ফিরে গেছেন। সেখানে তিনি হেঁটেছেন। এর অর্থ পদ্মাসেতু হয়ে গেছে।’
সোমবার দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের নবনির্বাচিত কমিটির সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। তথ্য ও সম্প্রচারসচিব মো: মকবুল হোসেন, প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো: নিজামুল হক, সচিব মো: শাহ আলম এবং সদস্যদের মধ্যে মো: শফিউল ইসলাম এমপি, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সাইফুল আলম, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, মুজাফফর হোসেন পল্টু, সেবীকা রানী, ড. ফেরদৌস জামান বৈঠকে অংশ নেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মাসেতু নিয়ে দেশে-বিদেশে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াই বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনো পদ্মাসেতু করতে পারবে না। বিএনপি’র নেতারাও তাতে সুর মিলিয়েছেন। বেগম জিয়া আরো বলেছিলেন যে, পদ্মাসেতু যদি করেও তাহলে এটা জোড়াতালি দিয়ে একটা সেতু হবে। তবে বাস্তবিক পৃথিবীর সকল সেতু জোড়া দিয়েই হয়।’
‘প্রধানমন্ত্রী যেহেতু পদ্মাসেতুর এপার থেকে ওপারে এবং ওপার থেকে এপারে এসেছেন, এখন বিএনপি নেতারা কি বলবেন এবং কখন এই পদ্মাসেতু দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাবেন সেই অপেক্ষায় আছি, কারণ তারা এই সেতু নিয়ে অনেক বিরূপ মন্তব্য করেছেন’ বলেন ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের যারা সেতু থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে পরে আবার অর্থায়নের প্রস্তাব দিয়েছিলেন যা প্রধানমন্ত্রী প্রত্যাখ্যান করেছেন, আশা করছি তারাও দেখবেন একটি দেশ তাদের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কিভাবে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকে ছিন্নভিন্ন করে এমন বিশাল সেতু নির্মাণ করতে পারে। যারা পদ্মাসেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করেছিলো তারা নিশ্চয়ই এখন এই পদ্মাসেতু দেখে লজ্জিত হবে।
এর আগে মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, প্রেস কাউন্সিল আমাদের দেশে মুক্তমত চর্চা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে এবং আমরা এটিকে আরো শক্তিশালী করার উদ্যোগ ইতোমধ্যেই গ্রহণ করেছি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রেস কাউন্সিল গঠন করেছেন। মুক্তমত চর্চা এবং বহুমাত্রিক সমাজ গঠন ও একটি গণতান্ত্রিক সমাজকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যেই তিনি প্রেস কাউন্সিল গঠন করেছিলেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার একটি বহুমাত্রিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছে। আমাদের দেশে যেভাবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে সেটি অনেক উন্নয়নশীল দেশে নেই।’
একইসাথে উন্নত দেশগুলোতেও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যেমন আছে, সেখানে একইসাথে সংবাদপত্র এবং গণমাধ্যমের জবাবদিহিতাও আছে উল্লেখ করে উদাহরণ দিয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে কিছুদিন আগে একজন এমপি’র বিরুদ্ধে ভুল সংবাদ পরিবেশনের কারণে বিবিসির পুরো টিমকে পদত্যাগ করতে হয়েছিলো, ক’দিন আগেও একটি ভুল সংবাদ পরিবেশনের কারণে বিবিসিকে মোটা অংকের জরিমানা দিতে হয়েছে। একটি ভুল সংবাদ পরিবেশনের কারণে লন্ডন থেকে প্রকাশিত পৃথিবীর সবচাইতে পুরনো ১৬৭ বছরের ইংরেজি দৈনিক নিউজ অব দ্যা ওয়ার্ল্ড পত্রিকার বিরুদ্ধে মোটা অংকের জরিমানা হয় এবং তা দিতে না পারার কারণে তারা পত্রিকাই বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। কন্টিনেন্টাল ইউরোপে গণমাধ্যম ভুল সংবাদ পরিবেশন করলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়, তাদেরকে জবাবদিহি করতে হয় এবং একইসাথে জরিমানাও দিতে হয়।’