বালু দস্যুদের বালু উত্তোলনের ফলে হুমকিতে সদ্যনির্মিত কাটাখালী ব্রী
এস এম সোহেল, গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন যেন কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। প্রশাসনের অভিযানের পর কিছুদিন চুপচাপ থাকলেও ফের শুরু হয় তাদের অবৈধ কর্মকান্ড। বালুখেকোরা প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে উত্তোলন করছে বালু। আর এ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এ অবস্থায় একদিকে যেমন নদী হারাচ্ছে তার গতিপথ, অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। হুমকির মুখে পড়েছে কাটাখালী ব্রীজ। উপজেলার ঐতিহ্যবাহী করতোয়া নদীর ওপর নির্মিত এ ব্রীজটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে রাজধানী ঢাকার সাথে উত্তরাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগে বিপর্যয় ঘটবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাটাখালী ব্রীজ সংলগ্ন পূর্বপাশে সারিবদ্ধভাবে ১০টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে এলাকার প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে একই স্থান থেকে বালু উত্তোলনের ফলে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কাটাখালী ব্রীজসহ দুটি বিদ্যুতের পোল বিধ্বস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ব্রিজটি বিধ্বস্ত হলে রাজধানীর সাথে উত্তরাঞ্চলের গাইবান্ধা, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও পঞ্চগড়সহ আট জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার মারাত্মক বিপর্যয় ঘটবে। এছাড়াও ভূমি ধ্বসের আশঙ্কাও করছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা মোশারফ হোসেন জানান, ড্রেজার মেশিন দিয়ে অব্যাহতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে উপজেলার কাটাবাড়ীর ফুলহার থেকে খোলশী চাঁদপুর, শাকপালা, হাতিয়াদহ, তাজপুর, উত্তর ফুলবাড়ী, তালুককানুপুরের চন্ডিপুর ও সমসপাড়া, ফতেউল্লাপুর রায়ের বাড়ী, বড়দহ, কাজীপাড়া, পার ধনদীয়া, মহিমাগঞ্জ, শালমারা এলাকায় নদী তিরবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রাম রয়েছে ভাঙ্গনের হুমকীর মুখে।
সূত্রমতে, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনাসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনে গত এক বছরে প্রায় ৬-৭টি মামলা করা হয়েছে থানায়। সংশ্লিষ্ট ইউপি তহশিলদার এসব মামলার বাদি। এরপর বাদি ও মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা অদৃশ্য কারনে নিস্ক্রীয় থাকায় অভিযুক্তরা নির্বিঘ্নে এ অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইজার উদ্দিন তদন্ত কাজে নিস্ক্রীয়তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাদের গ্রেফতারে জোর তৎপরতা চলছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ভূ-গর্ভ থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে গত সাড়ে তিন মাসে ৮টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে ৯ জনের কাছ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা অর্থদন্ড আদায় করা হয়েছে। এ ছাড়াও ৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে।