রাম বসাক
শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের গুপিনাথপুরে গত সোমবার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সানোয়ার প্রামাণিক ও মণি হাজী গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গুরুতর আহত দুলাল (৫৪) বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে বগুড়ার শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। নিহত দুলাল গুপিনাথপুর উত্তরপাড়ার মৃত জেন্দার মোল্লার ছেলে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সানোয়ার প্রামাণিক গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নিহতের মামাতো বোন লতা (৩৫) ও স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, সোমবার সকালে মণি হাজী গ্রুপের মজনু মাষ্টারের নেতৃত্বে মামুন (৪০), সুমন (৩৫), জুয়েল (৩৫), ইরান (২৫), করিম (২০), খোকন (৩৫), নওশাদ (৪০), সোবহান, রানা, মাসুদ, রব্বানীসহ ৫০/৬০ জন লাঠি, ফালা, রামদা, হাসুয়া, হাতুড়িসহ দেশিয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সানোয়ার প্রামাণিক গ্রুপের দুলালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও বেধড়ক পিটিয়ে দুলালকে গুরুতর আহত করে ফেলে রেখে যায়। পরে দুলালের স্বজনেরা আশংকাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ও সেখানে তার শারীরীক অবস্থার চরমাবনতি ঘটলে বগুড়ার শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় এদিন সকালে দুলাল মারা যায়।
এলাকাবাসী জানায়, মণি হাজী গ্রুপের সন্ত্রাসী হামলায় বাধা দিতে গেলে সানোয়ার প্রামাণিক গ্রুপের সাথে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে সানোয়ার প্রামাণিক গ্রুপের আড়াই বছরের শিশু তামিম, জমির (৫৫), রবিউল (১১), মনি (২৫), জাহিদুল (২২), রোশনাই (৬০), রোস্তম (৪৫), নূরজামাল (৩৫), তোফাজ্জল (৩৫), বেলী (১৫), সুফিয়া (৪৫), বানাত (৪৫), আরিফ (২৭), সুবেল (১১) ও মণি হাজী গ্রুপের আহেদ (৫৫), নূর ইসলাম (৫৫), নবী (৫০), সাদ্দাম (১৮), শরীফ (৪০), ওহাব (৬৫), আশরাফ (৩০), পলী (১৭), স্বপ্না (৩২), মানিক (৩০), মামুদ (৫৫), ইনামুল (৩২) রহমান (৫৫), সামাদ (৪৫) নজরুল (৩৫), রব্বানী (৪৫)সহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ভাংচুর ও ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
নিহত দুলালের মা আয়শা (৭৫) কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, আমার ছেলেকে জুয়েল, শফিকুল, ইয়াসিন, তালেব, সুমন, মাসুদ ডেকে নিয়ে সবাই মিলে মেরে ফেলে এখন আবার আমাদেরও হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমি আমার ছেলে হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি শাহিদ মাহমুদ খান বলেন, লাশ জিয়া মেডিকেল থেকে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশবাদী মামলায় উভয়পক্ষের ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গুপিনাথপুরে আধিপত্য বিস্তার ও পানি গড়ানোকে কেন্দ্র করে সানোয়ার প্রামাণিক ও মণি হাজী দু’গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ৫ পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। এ ঘটনায় সানোয়ার প্রামাণিক ২১ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে। অন্যদিকে, থানা পুলিশ বাদী হয়ে অপর একটি মামলা দায়ের করে।