নাটোর জেলা প্রতিনিধিঃ চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রার অর্ধেক চিনিও উৎপাদন করতে পারেনি নাটোরের লালপুর উপজেলার নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস লিঃ। অথচ চিনিকল এলাকায় কৃষকের মাঠে প্রায় ১৫ হাজার মে.টন আখ দন্ডয়মান রেখে আখের অভাবে বেকায়দায় পড়ে মাড়াই মৌসুম শেষ করে চিনিকল কতৃপক্ষ। চাষিরা বলছেন, চাষীরা চিনিকলে আখ সরবরাহে দিনদিন আগ্রহ হারাচ্ছে। চিনিকলে আখ দিলে লোকসান হয়। বাইরে আখ বিক্রি করলে প্রতিমণে ৫০ থেকে ৬০ বেশি পান ফলে কম দামে চিনিকলে আখ দেওয়ার যৌক্তিকতা নাই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যেখানে পাওয়ার ক্রাশার মালিকরা প্রতি মণ আখের দাম দিচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা টাকা, সেখানে চিনিকল দেয় ১৪০ টাকা! চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (কৃষি) মুনজুরুল ইসলাম বলেন, মাঠে দন্ডায়মান আখ থাকলে চিনিকলে আখের মূল্য কম থাকায় অনেক চাষি পাওয়ার ক্রাশার মালিকদের আখ সরবারহ করছেন। ফলে আখ সংকটে এই মাড়াই মৌসুম শেষ করতে হয়েছে। চিনিকল কতৃপক্ষ জানায়, এবছর ২০২১-২২ মাড়াই মৌসুমে ১ লাখ ৭০ হাজার মে.টন আখ মাড়াই করে ৭ শতাংশ হারে ১৩ হাজার ৬শ মে. টন চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নিয়ে গত ২৬ নভেম্বর আখ মাড়াই শুরু হয়। তবে মাত্র ১ লাখ ২ হাজার ২শ ২২ মে.টন আখ মাড়াই করে গত ১ ফেব্রুয়ারি মাড়াই মৌসুম শেষ করে কতৃপক্ষ। এতে চিনিকলটি ৫.৪৯ শতাংশ হারে মাত্র ৫ হাজার ৬শ মে.টন চিনি উৎপাদন করতে সক্ষম হয়। এদিকে চিনিকল এলাকায় প্রায় ৯০ হাজার মে.টন আখ মাড়াই করে অবৈধ পাওয়ার ক্রাশার মালিকরা। এছাড়া মাঠে এখনো দন্ডায়মান প্রায় ১০ হাজার মে.টন আখ আখের মূল্য সহবিভিন্ন অজুহাতে চিনিকলে সরবারহ করেনি আখ চাষিরা। এ বিষয়ে চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক হুমায়ূন কবির বলেন, এখনো মাঠে যে দন্ডয়মান আখ রয়েছে তাতে আরো ১৫ দিন মাড়াই করা যেত। কিন্তু সারাবছর অবৈধ পাওয়ার ক্রাশারে আখ মাড়াই করায় অনেক চাষী চিনিকলে আখ সরবারহ করে নি। ফলে কাঁচামালের অভাবে চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয় নি। তবে উত্তরবঙ্গ চিনিকল আখচাষী সমিতির সভাপতি আনসার আলী দুলাল বলছেন, চিনিকলের আখ সরবারহ করে আখের উৎপাদন খরচও পাচ্ছে না চাষীরা। যেখানে পাওয়ার ক্রাশার মালিকরা প্রতি মণ আখের দাম দিচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা টাকা, সেখানে চিনিকল দেয় ১৪০ টাকা! এতে চাষীরা চিনিকলে আখ সরবারহে আগ্রহ হারাচ্ছে।