এ.এইচ. রিপন ভোলা দক্ষিন প্রতিনিধি:
ভোলার লালমোহন বৃদ্ধ মা-মেয়ে পরিত্যক্ত ঘরে বসবাস করেন,মাইনূর (৪০) নামে এক অসহায় নারী।
লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মাইনূরের স্বামী মারা গেছেন প্রায় ১২ বছর আগে। তখন থাকতেন পটুয়াখালীর রাঙাবালিতে। স্বামীর মৃত্যুর কয়েক বছর পর তার বাবা প্রায় ৮ বছর আগে ভোলার লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের হাশেম চকিদার বাড়ি এলাকায় ৩ শতাংশ জমি কিনে দেন।
জমি কেনার পরে মারা যান মাঈনূরের বাবাও। পরে ওই জমিতে এলাকাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে ঘর তুলেন মাঈনূর বেগম। বাস করছেন বৃদ্ধ মা আর এক মেয়েকে নিয়ে। বিগত কয়েক বছর ধরে মাথা গোঁজার একমাত্র বসত ঘরটি ঝরাঝীর্ণ হয়ে রয়েছে। বৃষ্টি আসলেই পানি পড়ে ঘরের মধ্যে। তখন অন্যের ঘরে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয় মাঈনূরকে। প্রতিবেশীদের সহযোগিতা আর এলজিইডির আরইআরএমপি প্রকল্পে কাজ করে সংসার চলে তার।
তবুও তিন বেলা খাবার জোটানো দায় মাঈনূরের। সংসারে এত-ই অভাব; চতূর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর একমাত্র মেয়েটিকে অর্থের অভাবে পঞ্চম শ্রেণিতেও ভর্তি করতে পারেনি মাঈনূর বেগম। তিনি বলেন, রাস্তার কাজ করে নিজে যা আয় করি তা দিয়ে তিন বেলা খাওয়াই দায়। তাই প্রায় সময় মানুষের সহযোগিতা নিয়ে চলতে হয়। তার ওপরে বসত ঘরটিও ভেঙে রয়েছে বিগত কয়েক বছর ধরে। টাকার জন্য ঘরটি ঠিকও করতে পারছি না। বৃষ্টি হলে অন্যের ঘরে গিয়ে থাকতে হয়। তাই সরকারের কাছে দাবী নতুন করে একটি ঘরে করে দেয়ার।
মাঈনূরের মেয়ে সীমা আক্তার জানায়, চতূর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সে পড়ালেখা করেছে উত্তর বালুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সংসারে অভাবের কারণে তার মা আর তাকে পরবর্তী শ্রেণিতে ভর্তি করাননি। সরকারি সহযোগিতা পেলে সে আবার পড়তে পারবে। মিশতে পারবে সহপাঠীদের সাথে। এমনটাই আশা সিমার। স্থানীয় সুমন নামের এক ব্যক্তি বলেন, মাঈনূর বেগমের পাশে সব সময় স্থানীয়রা দাঁড়িয়েছেন। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে ভেঙে রয়েছে মাঈনূরের বসত ঘরটি। যা বর্তমানে প্রায় বসবাস অনুপযোগী। সরকারিভাবে যদি মাঈনূরের জন্য একটি ঘর করে দেয়া হয়, তাহলে বৃদ্ধ মা আর সন্তানকে নিয়ে একটু শান্তিতে থাকতে পারবে সে। এব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহাগ ঘোষ বলেন, যেহেতু সে ভূমিহীন নয় সেজন্য তাকে ঘর দেয়া যাবে না। তবে তার ঘর মেরামতের জন্য টিনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে, সেক্ষেত্রে তাকে লিখিত আবেদন করতে হবে।