কুমার রায় খুলনা ব্যুরো প্রধান খুলনার দাকোপ উপজেলার বারুইখালী আশ্রয়নণের চারটি ব্যারেকের সবগুলা ঘর জরাজির্ণ হয়ে বসাবসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ অবস্হায় সেখানে বসাবস করছেন চল্লিশটি পরিবারের শতাধিক মানুষ। সরোজমিনে দেখাযায় বারুইখালী আশ্রয়ণের অধিকাংশ ঘর জরাজির্ণ হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন জির্ণ অবস্হায় থাকার কারণে ঘরগুলো বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে বলে দাবী করেছেন ওখানকার বাসিন্দরা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দার বলেছেন এমন পরিস্হিতিতে আশ্রয়ণের চারটি ব্যরাকের চল্লিশটি পরিবারের দুই শতাধিক মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। জানাগেছে ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে দাকোপ উপজেলার পানখালী ইউনিয়নের চুনকুড়ি নদীর তীরে বারুইখালী এলাকার ১৫ একর খাসজমির উপর প্রয়োজনীয় পুকুর, বাথরুম সহ নির্মাণ করা হয় ১০ টি ব্যারাকে গড়ে তোলাহয় টিন সেডের ঘর সেনা বাহিনীর তত্বাবধনে এ ব্যারাক নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৯ সালের দিকে সেখানে মাথা গোঁজার ঠাই হয় অসহায় হতদরিদ্র ১০০ টি ভুমি ও গৃহহীন পরিবারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁদের পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে নানা ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা থাকলেও সেটি শুধু কাগজ কলমেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। ৪টি ব্যারাকের ছাউনির টিনে মরিচা ধরে বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় ছিদ্র হয়ে গেছে। বৃষ্টি এলে টিনের ছিদ্র দিয়ে পানি ঘরের ভেতরে পানি পড়ে। বৃষ্টির পানিতে ঘরের ভেতরে রাখা জিনিস ও আসবাব ভিজে যায়। ঘরের জিনিসপত্র রক্ষায় চালের ফুটো বরাবর হাঁড়ি পাতিলসহ বিভিন্ন বাসন পেতে রাখতে হয়। গতকাল শুক্রবার সরেজমিন দেখা গেছে, পাকা খুঁটির পলেস্তারা খসে পড়ে লোহার রড বের হয়ে গেছে। বৃষ্টির পানি আটকাতে অনেকে আবার ঘরের ভেতর টাঙিয়ে দিয়েছেন পলিথিন। স্যানিটেশনের অবস্থাও বেহাল। ৩টি শৌচাগারই ভেঙেচুরে নষ্ট হয়ে গেছে। সেখান থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। ব্যারাকগুলোর মাঝে একটি খালের ওপরের ছোট কালভার্টটি ভেঙে যাওয়ায় সেখানে গাছ ফেলে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন আশ্রয়ণের বাসিন্দারা। বারুইখালী আশ্রয়ণ প্রকল্প বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মহিদুল শেখ বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের সবাই দিনমজুরি, কৃষিকাজ, ভ্যান, অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালান। অনেকের ঘরে উপার্জনক্ষম লোক না থাকায় বয়স্ক, বিধবা ভাতা ও সরকারি ত্রাণ তাঁদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন। এ অবস্থায় ঘূর্ণিঝড় ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমাদের লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয়।’ মহিদুল শেখ আরও বলেন, ব্যারাকগুলো ওয়াপদা বেড়িবাঁধের বাইরে হওয়ায় বৃষ্টির সময় ব্যারাকের সব ঘরে পানি উঠে যায়। যদি ব্যারাকগুলোর চার পাশে বাঁধ দেওয়া হতো তা হলে আর এ সমস্যা হতো না।’ সমিতির সভাপতি সাহেব আলী মোল্লা বলেন, ‘সে সময়ও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে আমরা আনন্দিত হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, এই ঘরে থেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে স্বাবলম্বী হব। কিন্তু স্বাবলম্বী হওয়া তো দূরের কথা এখন আর কেউই আমাদের খোঁজ রাখেন না। আশ্রয়ণের ঘরগুলো মেরামতের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলেও আজও কেউ মেরামতে এগিয়ে আসেননি।’ পানখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহম্মেদ বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো মেরামতের জন্য উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। মাসিক মিটিংয়ে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ আব্দুল কাদের বলেন, ‘দুই বছর আগে আশ্রয়ণ প্রকল্পের খালের এক পাড়ে ৬টি ব্যারাকের ঘরগুলো মেরামত করা হয়েছে। অন্য পাড়ের ৪টি ব্যারাকের ঘরগুলো মেরামত বাকি আছে। অর্থ বরাদ্দ না থাকায় এই মুহূর্তে মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলেই ঘরগুলো মেরামত করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিন্টু বিশ্বাস বলেন, ‘১০টি ব্যারাকের মধ্যে ৬টি ব্যারাকের সব ঘর সংস্কার করা হয়েছে। বাকি ৪টি ব্যারাকের ঘরগুলো সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়েছি। বরাদ্দ পেলে সংস্কার কাজ শুরু করা