বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি:
বাগেরহাটের কচুয়ায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী জাফরিন আক্তার ময়না(১৩) ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।ঐ ছাত্রী জোবাই আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত রয়েছে।
বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের জোবাই এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।ধর্ষণের শিকার জাফরিন আক্তার জাহিদ খানের বড়মেয়ে।এ বিষয় জাহিদ খান আমাদের জানান,আমার মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ফুসলিয়ে আসাদুল খানের ছেলে তরিকুল ইসলাম(১৯)কৌশলে তার ঘরে নিয়ে একাধিক বার শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করে।ঘটনাটি আমার স্ত্রীর চোখে ধরাপরলে বিষয়টি সাথে সাথে তার পরিবারকে জানানো হয়।তার ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ের কথা বলে আমাদের চুপ থাকতে বলে।কিন্তু একপর্যায়ে তারা আমার মেয়েকে গ্রহন করবে না বলে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখায়।এতে আমি ভীত হয়ে পরি।
এ বিষয়ে শিশুটির মা মুর্শিদা বেগম আমাদের বলেন,আমার মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে আমি তার বিচার চাই।এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে বলেন তরিকুল ইসলাম সম্পর্কে আমার আত্মীয় হওয়ার সুবাদে তাদের বাড়িতে আমি সহ আমার পরিবারের সকলের নিয়মিত যাওয়া আসা ছিল।এই সুযোগে আমার বড় মেয়ে জাফরিন আক্তারকে প্রলোভন দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তরিকুল একাধিক বার ধর্ষণ করে।
পরে আমার চোখে বিষয়টি ধরা পরলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।ঘটনার দেড়মাস আগে তরিকুলের সাথে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে জানতে পেরে আমার মেয়েকে বিভিন্ন ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করি কিন্তু আমার মেয়ের সাথে যে খারাপ কিছু হয়েছে তা আমরা ঐ সময় বুঝে উঠতে পারিনি।ঘটনা জখন প্রকাশ পায় তখন তারা তাদের ছেলের সাথে আমার মেয়েকে বিয়ে দিবে বলে চুপ থাকতে বলে।আমিও মেয়ের সন্মানের কথা চিন্তা করে প্রথমে চুপ থাকলেও পরে আমার মেয়েকে গ্রহন করবে না বলে হুমকি দেয়।এর পর স্থানীয় ভাবে ঘটনাটি মিমাংসার চেষ্টা করেও কোন লাভ হয়না।বরং আমার মেয়ে গর্ভবতী হয়েছে এমন খবরে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে যায় তারা ঔষধ খায়িয়ে বাচ্চা নষ্ট করে সমাধানের কথা বল্লে দিকবিদিক হারিয়ে নভেম্বর মাসে খয়েরী রংএর ২ টা ফেমিকন নরেড বড়ি খায়িয়েছি।এরপর আমার মেয়ে আত্মহত্যার পরিকল্পনা নেয় এ বিষয়ে সমাধানের জন্য এলাকার বেশ কয়েক জন গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে গত ৬ মার্চ একটা সালিশ বৈঠক বসে কিন্তু সবকিছু সোনার পরে ৭ ই মার্চ সমাধান দেওয়ার কথা বলে আমাদের সাথে এ বিষয়ে আর কোন যোগাযোগ করেনি।
থানায় কোন অভিযোগ করেছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন,আমার অর্থ সম্পদ কিছু নেই যাদের সাথে আমি লড়ছি তাদের সাথে আমি পারবো না এই দুর্বলতার জন্য আমি অভিযোগ না করে সামাজিক ভাবে আমি মিমাংসা করতে চেয়েছি।তবে আমার অভিযোগ দেওয়ার ইচ্ছে আছে এবং আমার মেয়ের সাথে যা হয়েছে তার সঠিক বিচার চাই।শিশুটির দাদী রবেজান বলেন,ঘটনাটি সম্পূর্ণ সত্য আমি এর ন্যায় বিচার চাই।আমার যদি অপরাধ হয় তাও বিচার করেন তার যদি অপরাধ হয় তার ও বিচার চাই।
শিশু জাফরিন আক্তার বলেন,চার মাসের মতো তরিকুলের সাথে আমার সম্পর্ক তৈরি হয়।এর পর বিয়ের কথা বলে আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তার সাথে শারিরীক সম্পর্ক করতে বাধ্য করে।পরে ঘটনা জানাজানি হলে বিয়ে করবে না বলে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।আমরা জাফরিনের লেখা ডাইরি থেকে তাদের অবৈধ সম্পর্কের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে পারি।
অভিযুক্ত তরিকুল ইসলামের পিতা আসাদুল ইসলাম বলেন,আমি ঘটনাটি সুনেছি আমার ছেলের সাথে ঐ মেয়ের নাকি একটি অবৈধ সম্পর্ক হয়েছে। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একটি সালিশ বৈঠক হয়েছে সেখানে আমি উপস্থিত ছিলাম কিন্তু সেখান থেকে কোন মিমাংসা হয়নি।তার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোন হুমকি দেওয়া হয়নি বরং মেয়ে পক্ষের কাছ থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে তা মেনে নেওয়া হবে বলে জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত তরিকুলের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সামনাসামনি কথা বলবে বলে ফোন বন্ধ করে রাখে।পরবর্তীতে তরিকুল ও তার মায়ের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন,আমরা এ বিষয়ে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি তবে বিষয়টি নিয়ে ঘটনাস্থলে কচুয়া থানা তদন্ত অফিসার সহ ফারিতে দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের ঘটনা স্থলে পাঠানো হয়েছে।ভিকটিম ও তার পরিবার এ ঘটনা আমাদের কাছে অস্বীকার করেছে।মেয়ে ও ছেলের পরিবারের পক্ষ থেকে বলেছে যেটুকু ঘটেছে তা আমরা দু’পক্ষ মিলে মিমাংসা করেছি আমরা এ নিয়ে কোন মামলা করবো না।তাই লিখিত অভিযোগ না পেলে আমরা কোন ব্যবস্থা নিতে পারছি না।