মোঃ মজিবর রহমান শেখ,বিএনপি মহাসিচব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্য সামগ্রীর দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে সাধারণ মানুষজনের পিঠ আজ দেয়ালে ঠেকে গেছে। প্রত্যেকটি পন্যের মূল্য যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, এ অবস্থায় নিম্ন আয়ের, মধ্যবিত্ব ও সাধারণ মানুষজন হিমশিম খাচ্ছে। তারা আজ অসহায় হয়ে পরেছেন। এটার জন্য আমরা সবসময় সরকারের উদাসীনতা, চরম ব্যর্থতাকেই দায়ী করছি। তিনি ১৩ মার্চ রোববার ঠাকুরগাঁও জেলা পৌর শহরের কালিবাড়িস্থ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে উপরোক্ত কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আ’লীগের ২/১ জন মন্ত্রী বলেছেন, দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির সাথে নাকি বিএনপি জড়িত। আমি তো কোনদিন ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলাম না, তাহলে ব্যবসায়িদের সাথে আমার সম্পর্ক কেমন করে হবে। এখন বিএনপি যদি এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তাহলে উনারা সরকারে কেন আছে? বিএনপির হাতে ক্ষমতা দিয়ে দিক। এ জাতীয় কথাবার্তা বলে তারা এ অবস্থাটাকে আরও হাস্যকর অবস্থার দিকে নিচ্ছেন। জনগনের প্রতি আজ তারা তামাশা শুরু করেছে। সাধারণ মানুষের আজ নাভিশ্বাস উঠেছে। মানুষজন চাল, ডাল, তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য ঠিকমত কিনতে পারছে না। তাই তারা উদ্ভট কথাবার্তা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। এ সরকার যেহেতু জনগনের দ্বারা নির্বাচিত নয়, জনগণের প্রতি তাদের দায়বন্ধতা না থাকায় এমনটা করতে পারছে। আজকে তাদের চরম ব্যর্থকার কারনে পদত্যাগ করা উচিত এবং নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা উচিত। এই সরকার টিকে আছে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে। কাজেই তারা রাষ্ট্রিয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করছে অন্যায়ভাবে। বিচার বিভাগ, আইন শৃংখলার সমস্ত বাহিনীগুলোকে তারা নিয়ন্ত্রণ করে। তিনি আরও বলেন, আজকে সরকার সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রগুলোকে এমন বাজেভাবে ব্যবহার করার ফলে আজ যে সমস্যা তৈরী হয়েছে তা হলো, আজকে ভিন্নমত যারা পোষন করছে, জনগণের পক্ষে কথা বলছে তাদেরকে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। নিজেদের প্রয়োজনে সরকার বিভিন্ন আইন তৈরী করেছে। সাংবাদিকগণ যাতে করে কথা বলতে না পারেন, লিখতে না পারেন সেজন্য বেশকিছু আইন বানিয়েছে সরকার। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন। ইতিমধ্যে প্রায় ৬শ এর মত সংবাদকর্মীকে এ আইনের আওতায় আনা হয়েছে। প্রায় ২শ এর মত সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন নতুন যে নীতিমালার কথা সরকার বলছে তারা শুধু সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত কথা বার্তাকেও নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। এ জাতীয় কাজের মাধ্যমে সরকার সাধারণ মানুষের মানবাধিকারকে লঙ্ঘন করা, বাক স্বাধীনতাকে রোধ করা, মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্পুর্নভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য করছে। এটা কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। সংবিধানকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে, জনসাধারণের অধিকারকে বঞ্চিত করতে চায়। আমরা অবিলম্বে এ নীতিমালাকে বাতিল করতে বলেছি। রাশিয়ার যে আগ্রাসন সেটাকে আমরা নিন্দা জানাই। যে কোন দেশের সার্বভৌমত্ত, স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্থ করা মানবাধিকার লঙ্ঘন করা সমান। এই যুদ্ধ বন্ধ করতে জাতিসংঘের ইভেকটিভ কোন পদক্ষেপ গ্রহনের ব্যাপারে সরকার কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি। এ সরকার সব সময় একটা নতজানু পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে চলছে। আজ রহিঙ্গারা প্রায় ৫ বছর ধরে শরনার্থি হিসেবে থাকলেও তাদের প্রত্যাবর্তনে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারেনি। এ কারনে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে তারা তীব্র একটা নিন্দাও জানায়নি।
মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন, ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর করিম, পয়গাম আলী, আল মামুন আলম, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ, জেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক মো: জাফরুল্লাহ, পৌর বিএনপির সহ সভাপতি আতাউর রহমান, মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক শাহরিয়ার কবির রতন, রুহিয়া থানা বিএনপির আহবায়ক আনসারুল হকসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।