মুসা মিয়া ,চাঁপাইনবাবগঞ্জঃ
এবার পেঁয়াজের ভালো ফলন হলেও ক্রমাগত দাম কমে যাওয়ায় মুখের হাসি নেয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের পেঁয়াজ চাষিদের।
অব্যাহত দম কমে যাওয়ার কারণে উৎপাদন খরচ উঠানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে চাষিদের। দাম কমতে কমতে খুচরা বাজারে এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজ প্রকারভেদে ১২ থেকে ১৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
নতুন পেঁয়াজ বাজারে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে অব্যাহতভাবে দাম কমতে শুরু করেছে। এক মণ পেঁয়াজ প্রকারভেদে বাজারে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। চাষিদের দাবি গত দুই বছরের তুলনায় এবার তারা পেঁয়াজের দাম মণ প্রতি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কম পাচ্ছেন।
গত কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন খুচরা বাজারে প্রকারভেদে ১২ থেকে সর্বোচ্চ ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখাগেছে।
নিজেদের সংরক্ষণ করার মতো সক্ষমতা না থাকায় মাঠ থেকে স্বল্পদামে মাত্র ১২-১৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা। কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করায় উৎপাদন খরচ উঠবে কিনা এ আশংকা আছেন কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ সুত্রে জানাগেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় ৪ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে শাহীপুরী, ফরিদপুরী, বারি১, এন৫৩, সুখসাগর এসব জাতের পেঁয়াজ চাষ হয় ।
আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবছর গড়ে প্রতি বিঘায় ৪০ থেকে ৬০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে বলে জানান চাষিরা। শিবগঞ্জ উপজেলার চককৃর্তী গ্রামের পেঁয়াজ চাষি শহিদুল ইসলাম বলেন প্রতি কেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে খরচ দাঁড়িয়েছে ২২ থেকে ৩৫ টাকা। কিন্তু বর্তমানে হাটে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৭ টাকা কেজি । এতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে চাষিদের ১০ থেকে ১৮ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।
গত কয়েক বছর ধরে পেঁয়াজের দাম বেশি থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিভিন্ন জায়গায় কৃষকরা পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হয়েছিলেন।কিন্তু বাজারে পেঁয়াজের দাম না থাকায় তারা এখন হতাশ। বাজারে এভাবে দাম কমতে থাকলে তারা পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন বলে মনে অনেকে ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, চাষিদের পেঁয়াজ চাষে আগ্রগ বাড়ানোর জন্য পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণ, প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। বাজারে এখন পেঁয়াজের দাম কমতির দিকে। এ অবস্থায় কৃষকরা পেঁয়াজ বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়বেন। তাই তিনি বিক্রি না করে কৃষকদের দেশীয় পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করার পরামর্শ দেন।