এস.এম.বিপু রায়হান , সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
হঠাৎ বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে প্রধান শিক্ষিকাকেই পেলেন না উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পাওয়া যায়নি পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী।
এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকাসহ মোট চারজন শিক্ষকের মধ্যে তিনজন উপস্থিত থাকলেও পুরো স্কুল জুড়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৫০ জনেরও কম।
শনিবার (১৪ মে) দুপুরে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল মনসুর নগর ইউনিয়নের মাজনাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে এমন চিত্র দেখতে পান ইউএনও জাহিদ হাসান সিদ্দিকী।
বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থী ২২৪ জন। অথচ তিন শ্রেণি মিলে ৫০ জনেরও কম ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত পাওয়া যায়।
রোববার (১৫ মে) রাতে ইউএনও জাহিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, শনিবার দুপুরের দিকে বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে প্রথমে চতুর্থ শ্রেণিকক্ষে ঢুকে দেখি ৫৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ১০ জন রয়েছে। হাজিরা খাতায় দেখা যায় শ্রেণি শিক্ষক কোনো শিক্ষার্থীর নামই তোলেননি।দুপুর গড়িয়ে গেলেও প্রধান শিক্ষিকা রিনা আক্তার স্কুলে আসেননি। তিনি ছুটিও নেননি।
তিনি আরও বলেন, পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রধান শিক্ষিকা রিনা আক্তারের বাড়ি পাশের শালগ্রামে হলেও বগুড়ায় তার স্বামীর ঠিকাদারি ব্যবসার কারণে সেখানেই বেশিরভাগ সময় অবস্থান করেন। তার আপন ভাই আলমগীর হোসেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। প্রধান শিক্ষিকা নিয়মিত স্কুলে আসেন না। বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো তিনিই করেন।
এদিকে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কম কেন এমন প্রশ্নের জবাবে সহকারী শিক্ষক বাবলু মিয়া ও আলমগীর হোসেন জানান, ধান ও ভুট্টা মাড়াইয়ের কাজ চলার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা ঠিকমতো স্কুলে আসছে না।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা রিনা আক্তারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তিনি বিদ্যালয়ে আসতে পারেননি। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছুটিও নেননি বলে স্বীকার করেন তিনি।
কাজিপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম হাবিবুর রহমান জানান, চরের বিদ্যালয়গুলোতে এমন সমস্যা হচ্ছে। লোকবল স্বল্পতার কারণে সঠিক তদারকি করাও সম্ভব হয়ে ওঠে না। মাজনাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা আমাকে ইউএনও স্যার জানিয়েছেন। ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।