নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সাম্প্রতিক সময়ে একজন ভুক্তভোগী র্যাব-১, উত্তরা, ঢাকায় এসে অভিযোগ করে যে, গত ২২ জুলাই ২০২২ তারিখে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে মাস্তুরা আক্তার প্রিয়া এর সাথে যোগাযোগ হয়। গত ১০ আগস্ট ২০২২ তারিখ আনুমানিক ২০০০ ঘটিকায় ভিকটিমকে মাস্তুরা আক্তার প্রিয়া কৌশলে রাজধানীর একটি অভিজাত আবাসিক এলাকায় তাঁর বান্ধবীর বাসায় নিয়ে যায়। রুমের ভিতরে প্রবেশ করার পর পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রিয়া ও তার সহযোগীরা ১) মোঃ আল মাহমুদ @ মামুন, ২) মোঃ আকরাম হোসেন @ আকিব, ৩) তানিয়া আক্তার, ৪) মোঃ রুবেল, ৫) মোঃ মহসীন ও ৬) মোঃ ইমরান জোরপূর্বক ভিকটিমকে বিবস্ত্র করে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে ক্যামেরায় ধারণকৃত এসব অশ্লীল ভিডিও দেখিয়ে আটকপূর্বক মুক্তিপণ হিসাবে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। অতঃপর ভিকটিমের নিকট হতে বিকাশের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক ১ লক্ষ টাকা ও ব্যাংক চেকের মাধ্যমে ৪ লক্ষ টাকা জোরপূর্বক আদায় করে। সামাজিক লোকলজ্জার ভয়ে ভিকটিম ঐ সময়ের ঘটনাটি একটি স্পর্শকাতর ও বিছিন্ন ঘটনা ভেবে কোথাও কোন অভিযোগ না করে নীরব থাকেন। কিন্তু এ ঘটনার এক সপ্তাহ পরে পুনরায় প্রধান অভিযুক্ত আল মাহমুদ @ মামুন ভিকটিমের কাছে আরও ২ লক্ষ টাকা দাবী করে এবং এই বলে হুমকি প্রদান করে যে, দাবীকৃত অর্থ প্রদান না করলে ধারণকৃত অশ্লীল ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হবে। ভিকটিম নিরুপায় হয়ে এতদ্সংক্রান্তে র্যাব-১ এর নিকট একটি লিখিত অভিযোগ করে আইনগত সহায়তা কামনা করেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই বর্ণিত ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে র্যাব-১ ছায়াতদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ২৩ আগস্ট ২০২২ তারিখ আনুমানিক ০৬০০ ঘটিকায় র্যাব-১ এর আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর ভাটারার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা এবং দক্ষিনখানে অভিযান পরিচালনা করে পর্ণোগ্রাফার ও চাঁদাবাজ চক্রের মূলহোতা ১) মোঃ আল মাহমুদ @ মামুন (২৬) এবং তার সহযোগী ২) মাস্তুরা আক্তার প্রিয়া (২১), ৩) মোঃ আকরাম হোসেন @ আকিব (২০), ৪) তানিয়া আক্তার (২৫), ৫) মোঃ রুবেল (৩২), ৬) মোঃ মহসীন (২৬) ও ৭) মোঃ ইমরান (৩২)’দেরকে গ্রেফতার করে। এসময় ধৃত অভিযুক্তদের নিকট হতে অশ্লীল ছবি ও গোপন ভিডিও ধারণ কাজে ব্যবহৃত ১৪ টি মোবাইল ফোন ও ০২ টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামীরা বর্ণিত অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততার তথ্য প্রদান করে।ধৃত অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। এ চক্রের মূলহোতা মোঃ আল মাহমুদ @ মামুন এবং তার নারী সহযোগী তানিয়া আক্তার ও মাস্তুরা আক্তার প্রিয়া। এই দুই নারী সদস্যের ছবি ও ভূয়া পরিচয় ব্যবহার করে মূলহোতা আল মাহমুদ @ মামুন বিভিন্ন ব্যক্তিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রলোভন দেখিয়ে নির্দিষ্ট কোন আবাসিক ফ্ল্যাট বা হোটেলে আমন্ত্রণ জানাত। ভিকটিমরা উক্ত স্থানে উপস্থিত হলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অন্যান্য সদস্যরা কৌশলে উক্ত স্থানে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন ভয়-ভীতি প্রদর্শন পূর্বক ভিকটিমদেরকে জিম্মি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করত। এই কৌশল অবলম্বন করে এই চক্রটি বিগত ২ বছরে প্রায় ৫০ (পঞ্চাশ) এর অধিক ভিকটিমের নিকট হতে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে। উক্ত আসামীরা রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় উক্ত অর্থ ব্যায় করে বিলাসবহুল জীবন-যাপন করে আসছিল মর্মে স্বীকার করে।ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।