মোঃ রেজাউল করিম,ঈদগাঁওঃ ঈদগাঁওতে গুরু এবং শিষ্যের (শিক্ষক ও ছাত্র) মধ্যে পরস্পরের প্রতি যে সম্মান ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তা সচেতন মহলে চাউর হচ্ছে। বিষয়টি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বেশ অনুকরণীয় হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
চাকরি জীবন থেকে অবসর প্রাপ্তি উপলক্ষে এক শিষ্য গুরুর নিকট গিয়ে তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন, দুআ কামনা, কুশলাদি বিনিময় এবং শারীরিক খোঁজখবর নিয়েছেন। এর মাধ্যমে ওই গুরুর প্রতি শিষ্যের শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শনের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
অন্যদিকে বিদায় বেলায় প্রিয় শিষ্যের জন্য শুভেচ্ছা উপহার পাঠিয়ে তার প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান প্রদান করেছেন এক গুরু। এ অনন্য নজীরে ওই গুরুর মহানুভবতার পরিচয় মিলেছে।
ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যকার হৃদ্যতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ এ ধরনের সম্পর্ককে চমৎকার ও সুশীল বলে মনে করছেন অনেকে।
প্রাপ্ত তথ্যের প্রকাশ, ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের উত্তর পালাকাটা নিবাসী মাওলানা খলিল আহমদ শেখী একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি ১৯৯৮ সালের অক্টোবর মাসে একই ইউনিয়নের মাইজ পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। এর আগে ১৯৬১ সাল থেকে প্রায় ১৯৮২ সাল পর্যন্ত তিনি ঈদগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। সেখানে তার প্রিয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। রফিকের প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে এখন তিনিই একমাত্র জীবিত।
আর এ শিক্ষার্থী রফিকই ১২ ই নভেম্বর ঈদগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘ চাকুরী জীবন শেষে প্রধান শিক্ষক হিসেবে অবসরে যান।
তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় দেয়ার একদিন আগেই তিনি তার প্রাথমিক লেভেলের জীবিত শিক্ষক খলিল আহমদের বাসায় যান। তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন, পরবর্তী জীবনের জন্য তার কাছে দোয়া কামনা, শারীরিক ও পারিবারিক খোঁজ-খবর নেয়া, প্রিয় শিক্ষককে স্বচক্ষে দেখা এবং তার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য ওই শিক্ষকের সাথে তার এ সৌজন্য সাক্ষাৎ।
এদিকে প্রিয় শিক্ষার্থীর প্রতিও স্নেহ ও ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন ওই গুরু।বিদায় অনুষ্ঠানে তার এককালের প্রিয় শিক্ষার্থীর জন্য শুভেচ্ছা উপহার পাঠিয়ে তাকে সম্মানিত করলেন ওই শিক্ষক।
আর ওই শুভেচ্ছা উপহারটি হস্তান্তর করেন ঐ শিক্ষকের পুত্র, জালালাবাদের মোহনভিলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আতা উল্লাহ বুখারী।
বিরল এ ঘটনা প্রকাশ হলে অনেককে মন্তব্য করতে শোনা যায়, সম্মান দিলে, সম্মান পাওয়া যায়। অর্থাৎ গুরুকে সম্মান দিয়ে শিষ্য নিজেও সম্মানিত হয়েছেন।
গুরুকে মর্যাদা দেয়ায় নিজেও মর্যাদাবান হলেন শিষ্য।
শিষ্যের প্রতি শুভেচ্ছা উপহার পাঠিয়ে গুরু মহানুভতার পরিচয় দিয়েছেন বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের।