নিজস্ব প্রতিবেদকঃ র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন(র্যাব) বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। বিভিন্ন ধরণের চাঞ্চল্যকর অপরাধের স¦রূপ উদ্ঘাটন করে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার কারণেই র্যাব মানুষের কাছে আস্থা ও নিরাপত্তার অনন্য নাম হিসাবে গ্রহণ যোগ্যতা অর্জন করেছে। ডাকাতি, খুন, অপহরণসহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর (ক্লুলেস) হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য র্যাব সর্বদা সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে।
গত ০৬ নভেম্বর ২০২২ ইং তারিখ রাজধানীর কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ পার হতে হাত-পা বাঁধা ও মুখমন্ডল স্কটেপ পেচানো অবস্থায় ০১ ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে মরদেহটি পিকআপ চালক সাকিবের বলে শনাক্ত করেন ভিকটিমের চাচা। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে ভিকটিমের চাচা মোঃ জামাল(৩৭) অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-২৭/৬২২ তারিখঃ ০৭/১১/২০২২ ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড)। এই ঘটনায় দেশব্যাপী বিভিন্ন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় র্যাব-২ এ বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামি গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে গোয়েন্দা নজরধারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল এই ক্লুলেস হত্যাকান্ডের মূল আসামিদের গ্রেফতার করতে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মোঃ মিজানুর রহমানকে গত ০২/১২/২০২২ ইং তারিখে গ্রেফতার করে র্যাব-২। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে তার সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে। এরপর মোঃ মিজানুর রহমানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত ০৩/১২/২০২২ ইং তারিখ উক্ত হত্যা মামলার দ্বিতীয় আসামি মোঃ নাইমুল হোসেন@সিয়াম গ্রেফতার করা হয়। মোঃ নাইমুল হোসেন @সিয়ামের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গতকাল ২৩/১২/২০২২ইং সময় ১৮.০৫ ঘটিকায় উক্ত হত্যাকান্ডের মূলহোতা মোঃ সোলায়মান @সিয়াম (২০), পিতাঃ মোঃ ইয়াকুব আলী, থানাঃ নাসিরনগর, জেলাঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া‘কে রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব-২। উক্ত মামলায় র্যাব-২ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে হত্যায় জড়িত তিন জনের মধ্যে মূলহোতাসহ ০৩ (তিন) জনকেই গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি মোঃ সোলায়মান @সিয়াম পূর্বে গ্রেফতারকৃতদের সহায়তায় উক্ত হত্যাকান্ড সংঘঠিত করেছে বলে স্বীকার করে।
আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, তারা বিভিন্ন সময়ে বছিলা, মোহাম্মদপুর ও রায়ের বাজার এলাকায় সংবদ্ধভারে চুরি ও ছিনতাই কাজ করত। তারা লোভে পড়ে অল্প সময়ে অধিক অর্থ আয়ের জন্য ট্রাক/পিকআপ ভাড়া করে সেই ট্রাই/পিকআপ ছিনতাই করে বিক্রয়ের পরিকল্পনা করে। তাদের পরিকল্পনা মাফিক সাকিবের গাড়ীটি তারা ভাড়া করে। গন্তব্য যাবার একপর্যায়ে তারা কৌশলে হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং কালো স্কটেপ দিয়ে তার মুখ ও মাথা পেচিয়ে ফেলে। এরপর রাত ১২ টার দিকে তারা নদীর দিকে নিয়ে গিয়ে সাকিবের মৃতদেহ নদীতে ফেলে দেয় । উক্ত হত্যাকান্ডে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা সেই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ অব্যাহত আছে ।
গ্রেফতারকৃত আসামিকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।