মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ ঠাকুরগাঁও জেলায় এ বছর গমের আবাদ কিছুটা কমেছে। কৃষকেরা গত বছর গমের দাম কম পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা যায়। এ বছর ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে দেখা যায়; কৃষকেরা গম আবাদ না করে ভুট্টার চাষে ঝুকছেন বেশি। কারন গমের চেয়ে ভুট্রায় লাভ হচ্ছে বেশি। বর্তমানে ভুট্রার বাজারদর তুলনামুলক অনেক বেশি রয়েছে বলে জানা গেছে। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলায় এ মৌসুমে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয় ৪৪ হাজার ৬৯৯ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ লাখ ৮৫ হাজার ৫০১ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ২৭ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৯৪ হাজার ৭১ মেট্রিক টন। আবাদ হয়েছিল ৪৫ হাজার ১৯২ হেক্টর জমিতে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের চোঙ্গাখাতা গ্রামের কৃষক মাজেদুর রহমান জানান, তিনি গত বছর সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে গম আবাদ করেছিলেন। এ বছর দাম তুলনামূরক কম পাওয়ায় এ বছর দেড় বিঘা (৭৫ শতাংশ) জমিতে গম আবাদ করেছেন। একই সাথে গম আবাদ কম করার কারন হিসেবে সার ও কীটনাশকের দাম তুলনামুলক বেশিকেও দায়ী করেন তিনি। প্রায় ২ বিঘা (১শ শতক) জমিতে গম করেছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের বোচাকুপুর গ্রামের কৃষক আলহাজ্ব মোমিনুল ইসলাম। ইতিমধ্যে গমের ক্ষেত সবুজ আকারে রুপ নিয়েছে। নিয়মিত সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করছেন তিনি। ফলন ভাল হওয়ার আশা করলেও দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তিনি।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ– পরিচালক ড. মো: আব্দুল আজিজ জানান, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি গম আবাদ হতো ঠাকুরগাঁও জেলায় । কিন্তু গত বছর গমের দাম কিছুটা কম থাকায় কৃষকেরা এ বছর গমের আবাদ কিছুটা কম করেছেন। তিনি জানান, বর্তমানে ভুট্রার আবাদ বেড়েছে। গমের চেয়ে বেশি লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা ভুট্রা চাষে বেশি ঝুকছেন। ভুট্রার ফলনও ভাল হওয়ায় তারা দামও পাচ্ছে চাহিদামত। তার পরও কৃষকেরা গমের ন্যর্য মূল্য পাবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।