মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে ঠাকুরগাঁও কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে স্কুল প্রাঙ্গণে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। হারানো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনার লক্ষে ও নতুন প্রজন্মেকে পিঠার সাথে পরিচিত করার জন্য এ আয়োজন। বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে দুপরে স্কুলের বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে এই পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। তৃতীয় শ্রেণি থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণির প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থী অশংগ্রহণ করেন। প্রথমবারের মতো এমন পিঠা উৎসবে সম্পৃক্ত হতে পেরে আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠেন শিক্ষার্থীরা। দেখা যায়, এই উৎসবকে ঘিরে স্কুল মাঠে ৫০টিরও বেশি স্টলে সাজানো হয় বিভিন্ন প্রকার পিঠা। স্টল গুলোতে মুখরোচক বিভিন্ন ধরণের অন্তত ২০-২৫ আইটেমের পিঠা শোভা পায়। এসব পিঠা বাড়ি থেকে অভিভাবকগণের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীরা তৈরি করে আনেন। শিক্ষার্থীদের তৈরি এসব পিঠার স্টলে পরিদর্শন করেন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান। বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার স্নেহা বলেন, আর আগে এক সঙ্গে এতো ধরনের পিঠা কখনও দেখা ও খাওয়া হয়নি। স্কুলে এমন আয়োজনের জন্য আজকে আমরা এতোগুলো নানা ধরনের পিঠার সঙ্গে পরিচিত হতে ও খেতে এবং স্বাদ নিতে পারলাম। প্রত্যাশা করি এ ধরনের আয়োজন যেন প্রতিবছর অব্যাহত থাকবে।
অভিভাবক ফাহমিদা আক্তার বলেন, এমন উদ্যোগ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। কারণ আজকে এমন আয়োজন করা হয়েছে বলেই আমরা সন্তান নতুন নতুন পিঠা দেখতে ও জানতে পারছে। বাসায় যদিও আমরা শীতের সময় নানা ধরনের পিঠা বানিয়ে খেয়ে থাকি তা মাত্র দুই এক প্রকার। আর পিঠা উৎসবে এখানে অন্তত ২০-২৫ আইটেমের পিঠা দেখতে পারছি। তাই এই স্কুলের মতো অন্যান্য স্কুলেও এমন আয়োজন করা উচিত।
ঠাকুরগাঁও কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোতালেব হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় ও সহযোগিতায় প্রথমবারের মতো এ স্কুলে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন আয়োজন বর্তমান ছেলেমেয়েদের জন্য একটি বড় শিক্ষা বলে মনে করেন জেলা মহিলা কল্যাণ ক্লাব ও মহিলা ক্রিড়া সংস্থার সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসি। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, নতুন প্রজন্ম এখনো অনেকে পিঠা সম্পর্কে জানে না। তাই আমাদের বাঙালির সংস্কৃতি পিঠা সম্পর্কে বাস্তব শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যেই এই পিঠা উৎসবের আয়োজন।
এমন আয়োজন ভবিষ্যতে থাকবেও বলে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক জানান। তিনি আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শুধু পিঠা উৎসব নয়, নবান্ন, বসন্ত, বর্ষবরণসহ আমাদের বাঙালি জাতির যেসব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রয়েছে সেগুলোকে চর্চা করা উচিত ও প্রয়োজন। তাহলে নতুন প্রজন্ম এগুলো সম্পর্কে জানতে পারবে। আগে আমরা যা দেখেছি ও জেনেছি, তা এই প্রজন্মকে জানানোর জন্য এসব আয়োজন করা প্রয়োজন।