মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ ঠাকুরগাঁও জেলায় চলছে বোরো ধান রোপনের কাজ। কৃষকেরা ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বোরো ধানের চারা সংগ্রহ করেছেন এবং সেগুলো নারী-পুরুষ শ্রমিকদের কাজে লাগিয়ে রোপনের কাজ করছেন দেধারছে। এ বছর পানির তেমন একটা সমস্যা না থাকায় ধান রোপনের জন্য জমি প্রস্তুত করতে কোন সমস্যায় পরতে হচ্ছে না বলে জানা যায়। ঠাকুরগাঁও
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে কৃষকদের কৃষি বিভাগ থেকে বীজতলা তৈরী ও বোরো চারা রোপনের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় কৃষকেরা মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জমিতে সেচ, হালচাষ, সার প্রয়োগ, বীজ-চারা উঠানো ও প্রস্তুতকৃত জমিতে চারা রোপন করার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন কৃষকেরা। গত মৌসুমে আমনের ভাল ফলন হয় এবং কৃষকেরা ধানের ন্যার্য্য মূল্য পান। এ কারনে এ মৌসুমে বোরো চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। কৃষকেরা ড্রেন নির্মাণ করে বা নিজস্ব পাম্প ও শ্যালো মেশিনের সাহায্যে ক্ষেতে পানি নিচ্ছেন। আবার অনেকে তৈরি জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রেখেছেন দীর্ঘদিন। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আখানগর ভুল্লির বাঁধ এলাকার কৃষক সুশিল চন্দ্র বলেন, আমার সামান্য কিছু জমি আছে সেগুলোতে বোরো ধানের চারা রোপন শুরু করবো। সে কারনে জমি প্রস্তুত করছি। নিজের বাড়ির ২ টি গরু দিয়ে জমিতে হাল চাষ ও মাটি সমান করতে মই দেওয়ার কাজ করছি। আর ২/১ দিনের মধ্যেই সম্পুর্ন মাটি প্রস্তুত হয়ে গেলে চারা রোপনের কাজ শুরু করবো। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের মাষ্টারপাড়া গ্রামের কৃষক হামিদুর রহমান বলেন, প্রত্যেক বছর প্রায় সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেন তিনি। এ বছরও তিনি বোরো ধান রোপনের কাজ শুরু করেছেন। আর কিছুদিনের মধ্যে ধান লাগানো শেষ হবে বলে জানান তিনি। ঠাকুরগাঁও
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বোরো ধানের আবাদ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় ৬০ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে ধান লাগানো সম্পন্ন হয়েছে। এ মৌসুমে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ ৬৭ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন। যা গত বছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয় ৫৯ হাজার ১১৪ হেক্টর। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৭৩ মেট্রিক টন। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: সিরাজুল ইসলাম জানান, কৃষি বিভাগ থেকে ইতিমধ্যে কৃষকদের বিভিন্ন তথ্য প্রদানসহ কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। এ বছর শীতের কারণে কোল্ড ইনজুরিতে বোরো বীজতলার তেমন একটা ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। বোরোর আবাদ গত বছরের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বোরো ধানেরও বাম্পার ফলন হয়ে কৃষকেরা ধানের ন্যর্য্য মূল্য পাবেন এবং লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।