মোঃ রেজাউল করিম,ঈদগাঁও,কক্সবাজারঃ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ ধেয়ে আসছে কক্সবাজার উপকূলের দিকে। কক্সবাজারে আজ সকাল থেকে থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। সাগর রয়েছে বিক্ষুব্ধ। উপকূলে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট জোয়ারের পানি বেড়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ইতোমধ্যে জেলার ৫৭৬ টি আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়ে ৬৩৬ টি করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সর্বশেষ আপডেট তথ্য মতে মোট আশ্রিত লোক সংখ্যা ২ লাখ ৩২ হাজার ৩৭৭ জন। এ পর্যন্ত ক্ষতির কোন হিসাব পাওয়া যায়নি। ‘মোখা’ কক্সবাজার সমুদ্র উপকূল থেকে ৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ- দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। সেন্টমার্টিনে আজ প্রবল ভাবে এর প্রভাব প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। সেখানে বর্তমানে বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৫০ থেকে ৫৫ কিলোমিটার। আজ ভোর থেকে প্রশাসনের উদ্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় সরানোর কাজ চলমান রয়েছে। তবে আশ্রিত লোকজনের খাবার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে আশ্রয় নেয়া এ মানুষগুলোর জন্য খাবার ও পানিসহ সকল ব্যবস্থা পর্যাপ্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম।
অন্যদিকে পর্যটকদের ঝু্ঁকির কথা মাথায় রেখে সব ধরনের পর্যটন সেবা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে দুইদিনের সাপ্তাহিক ছুটিতে কয়েক হাজার পর্যটক বেড়াতে আসলেও অনেক পর্যটক ইতোমধ্যে কক্সবাজার ত্যাগ করেছেন।
সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে টাঙানো হয়েছে লাল পতাকা। পাশাপাশি সতর্কতা জারি করে পানিতে না নামতে মাইকিং করা হচ্ছে।
পর্যটন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবু সুফিয়ান জানিয়েছেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সৈকতের সব ধরনের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বিচ কর্মীরা এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে করছে।
এদিকে কক্সবাজার পৌর প্রিপারেটরি উচ্চ বিদ্যালয়, কক্সবাজার সৈকত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং কস্তুরাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ কক্সবাজার পৌর এলাকায় ১২ টি ওয়ার্ডে সম সংখ্যক আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেড ক্রিসেন্টের দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
এসব আশ্রয় কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, শহরের সমিতি পাড়া, কুতুবদিয়া পাড়া সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্বিগ্ন পরিবারের লোকজন নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে ও সহায় সম্পত্তি রক্ষার্থে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন। কক্সবাজার পৌরসভার পক্ষ থেকে আশ্রয় নেয়া মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
পৌর প্রিপারেটরি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা। তবে কস্তুরাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত শুধু একটি পরিবারের লোকজনকে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। তারা ততক্ষণ পর্যন্ত খাবারও অন্যান্য সুবিধা পাইনি বলে জানান।