এস এম সোহেল,গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ৮ নং মনোহরপুর ইউনিয়নের বালুখোলা গ্রামের সৌদি প্রবাসীর নিখোঁজ শিশু পুত্র আব্দুল্লাহ বায়েজিদ (৪) এর লাশ উদ্ধারের তিনদিনেই হত্যার রহস্য উন্মোচনে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। শিশু বায়েজিদের বড় বোনের সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক ও বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষোভ থেকে ছোট ভাই শিশু বায়েজিদকে হত্যা করে বলে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেছেন হত্যাকারী।
১৬ মে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস বিফ্রিং করে বায়েজিদ হত্যাকান্ডের রহস্য উৎঘাটনের সর্বশেষ তথ্য জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মোঃ কামাল হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বি সার্কেল আব্দুল্লাহ আল মামুন,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ সার্কেল ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ বিপিএম,পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদ রানা, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক নুর-ই আলম সিদ্দীকি, জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তগণসহ প্রিন্ট ও মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রেস বিফ্রিংয়ে গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার জানান,গত ৮ মে বিকেলে শিশু বায়েজিদ নিখোঁজ হয়। এ ব্যপারে ১০ মে পলাশবাড়ী থানায় নারী ও শিশুনির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন শিশুটির মা। একই দিনে প্রধান অভিযুক্ত প্রতিবেশী সাইফুল ইসলাম ওরফে শেরেকুলের ছেলে সাকিব হাসান ওরফে রোমান (১৯) ও সোহবার হোসেনে ছেলে ও রোমানের বন্ধু শরিফুল ইসলামকে (২০) পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সহিত জড়িত থাকার বিষয়ে সন্তোষজনক তথ্য প্রদান না করায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করেন। এরপর ১৪ মে আদালত দুই দিনেরর রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে ১। সাকিব হাসান ওরফে রোমান ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলে ১৫ মে রোমান আদালতে নৃসংশ এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। রোমানের দাবি বায়েজিদের বোনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বর্তমানে মেয়েটি যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় ক্ষোভে মেয়েটির ছোট ভাই বায়েজিদকে সে নিখোঁজের দিনই হত্যা করে।
এঘটনায় মোট ৯ জন কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলো পলাশবাড়ী উপজেলার বালুখোলা গ্রামের সাইফুল ইসলাম ওরফে শেরেকুল মন্ডলের ছেলে ১। মোঃ সাকিব হাসান ওরফে রোমান(১৯) এর বন্ধু ও তালুক ঘোড়াবান্ধা মধ্যপাড়ার সোহরাব হোসেন মেকারের ছেলে ২।মোঃ শরিফুল ইসলাম(২০) বালুখোলা গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে ৩। মোঃ খোরশেদ আলম (২১), রাজা মিয়ার ছেলে ৪। মোঃ আসাদুজ্জামান ওরফে রনি (১৯), মজিবর রহমানের স্ত্রী ৫। ছকিনা বেগম (৬০), সাইফুল ইসলাম ওরফে শেরেকুল মন্ডলের স্ত্রী ৬। ববিতা বেগম (৪৫), মোকসেদুর রহমান ওরফে বিদ্যুৎ এর স্ত্রী ৭। মনিরা বেগম (২২), সাইফুল ইসলাম ওরফে শেরেকুল মন্ডলের ছেলে ৮। আইনের সহিত সংঘাতে জড়িত শিশু রোস্তম আলী মন্ডল (১৪) শরিফুল ইসলাম মন্ডলের ছেলে ৯। আইনের সহিত সংঘাতে জড়িত শিশু সোহাগ মন্ডল (১৬)।
উল্লেখ্য, গত ৮ মে সোমবার বিকেলে বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা বালুখোলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী তাহারুল ব্যাপারীর চার বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ বায়েজিদ। পরে ১৩ মে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা বালুখোলা গ্রামের ধান ক্ষেত থেকে শিশু বায়েজিদের খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এঘটনায় শিশু বায়োজিদের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামী করে পলাশবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এ পর্যন্ত মোট ৯ জন গ্রেফতার করেছে পুলিশ।