বাঁধন প্রধান,পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ জোর করে জমি দখলের অভিযোগে মানববন্ধন করেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার কয়েকটি গ্রামের অধিবাসীরা। সোমবার দুপুরে দেবনগর ইউনিয়নের বাংলা চন্ডী গ্রামে ঘন্টাব্যাপি এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে তারা গ্রামের রাস্তায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। মানববন্ধনে সহস্রাধিক নারী পুরুষ অংশ নেয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রাহেলা আক্তার, আবু হাসান,আব্দুল জলিল, রাবেয়া বেগম, মিনারা আক্তার প্রমুখ। এসময় বক্তারা বলেন ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের নাম করে বেক্সিমকো গ্রুপ অফ কোম্পানি তিন ফসলি আবাদের জমি গুলো জোর করে দখল করছে। এই জমিগুলো দখল করলে ভুটুজোত, পাঠানপাড়া ও বাংলাচন্ডি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ ভূমিহীন হয়ে পড়বে। তারা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন অবিলম্বে জোর করে ভূমি দখল বন্ধ না করলে বৃহত্তর আন্দোলন করবে তারা।
বক্তারা আরও বলেন গত কয়েক বছর ধরে বেক্সিমকো গ্রুপ করোতোয়া সোলার প্লান্ট লি: নামে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্য এই এলাকায় দালালের মাধ্যমে ১৩৬ একর জমি ক্রয় করার উদ্যেগ নেন। কিন্ত জমির দালাল উপজেলার ভজনপুর—দেবনগর ইউনিয়নের নিজবাড়ি এলাকার হারুণ প্রধান ও কোম্পানীর ম্যানেজার বাবর আলী ভূয়া জমি ক্রয় করে কোম্পানীর কোটি কোটি টাকা আত্নসাৎ করেন। ক্রয়কৃত জমির কাগজ পত্র অনুযায়ী কম্পানী ১২ একর জমি বুঝে পান। পরে দালাল দুজনকে আসামী করে প্রতারণা সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে কম্পানী মামলা দায়ের করে। এসব মামলায় তারা দুজনেই এখন জেলখানায় আছেন। জমি না পেয়ে শেখগজ ও ময়নাগুড়ি মৌজার জমি এখন বেক্সিমকো গ্রুপ জোর করে দখল করছেন। কম্পানীর কাছে জমি বিক্রী করার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। জমি বিক্রী না করলে প্রতিনিয়ত ওই এলাকার সাধারন মানুষকে হয়রানী করারও হুমকি দিচ্ছেন তারা। বক্তারা আরও বলেন এই এলাকার সকল জমিতে বছরে ৩ থেকে ৪ টি কৃষি আবাদ হয়। এসব জমিতে কৃষি কাজ করে তাদের সংসার চলে। সন্তান লালন পালন সহ লেখাপড়ার খরচ চালাতে হয় এসব জমিতে উৎপাদিত ফশল বিক্রীর টাকা দিয়ে। এসব জমি কম্পানী দখল করলে তারা পথে বসবে। তাদের দাবি যে সব জমিতে আবাদ কৃষি হয়না সেসব জমিতে পাওয়ার প্লান্ট করা হোক। বেক্সিমকো কর্পোরেট হেডকোয়াটার্সের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ সুজা মিঞা ( ল্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) জানান, জোর করে জমি দখলের প্রশ্নই আসেনা। আমরা জমি কিনতে এসেছি। আমরা স্থানীয়দের বলেছি সঠিক মুল্যে জমি ক্রয় করা হবে। এখানে একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। এই এলাকার জমি পরিত্যক্ত। তিন ফশলী নয়। বিদ্যুৎ ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের এরকম একটি রিপোর্টের ভিত্তিতেই এখানে পাওয়ার প্লান্ট করার উদ্যোগ নিয়েছে বেক্সিমকো।
এ ব্যাপারে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, আমরা এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে উভয় পক্ষের লোকজন এসেছিল। উপজেলা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের উদ্যেগ নেয়া হয়েছে।