মোঃ খলিলুর রহমান,সাতক্ষীরাঃ সাতক্ষীরায় অর্থকরি ফসল হিসেবে পানের সাথে সুপারির উৎপাদনও বেড়েছে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় উৎপাদনে তেমন খরচ না থাকায় জেলার কৃষক নতুন নতুন সুপারি বাগান গড়ে তুলছেন। কৃষি বিভাগের হিসাব মতে, এ জেলায় বছরে ৪৫০ টন সুপারি উৎপাদন হয়, যার বাজার মূল্য ২০ কোটি টাকার বেশি।
পান উৎপাদনের পাশাপাশি বছরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সুপারি উৎপাদন হয় সাতক্ষীরায়। জেলায় দিন দিনই এ উৎপাদন বাড়ছে।
চলতি বছরে সাতক্ষীরায় ১ হাজার ৩৫০ বিঘা জমিতে সুপারি আবাদ হয়েছে। কেজিপ্রতি শুকনা সুপারির বাজার দর ৪৫০ টাকা।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার কুমিরা গ্রামের কৃষক অরবিন্দু কুমার বলেন, ‘আমার তিন বিঘা পরিমাণ জমিতে সুপারি বাগান রয়েছে। নারকেল বা অন্য ফসলি গাছগাছালির সঙ্গে মূলত সুপারি গাছ লাগানো রয়েছে। এসব গাছে ৩৫-৪০ বছর পর্যন্ত ফল আসে। বছরে ৭০-৮০ হাজার টাকার সুপারি বিক্রি করি। স্থানীয় ব্যাপারীরা পাইকারি দরে বাগান থেকে সুপারি পেড়ে নিয়ে যান। আমাদের গ্রামে অন্য কৃষককের পান বরজের পাশাপাশি অনেক সুপারি বাগান রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলার পাইকারি সুপারি বিক্রির মোকাম তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা বাজারে সপ্তাহে দুদিন মঙ্গল ও শুক্রবার হাট বসে। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর সুপারি আসে এই হাটে। স্থানীয় ছাড়াও পাশের যশোর ও খুলনা থেকেও পাইকার এসে পাটকেলঘাটা বাজার থেকে সুপারি সংগ্রহ করেন।
পাটকেলঘাটা বাজারের সুপারি বিক্রির আড়তদার হযরত আলী জানান, প্রতি সপ্তাহে দুদিন মঙ্গল ও শুক্রবার তার আড়তে ২০-২৫ লাখ টাকার সুপারি বেচাকেনা হয়। জেলার বিভিন্ন এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা পাটকেলঘাটা থেকে সুপারি ও পান কিনতে আসেন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা রাজার বাগান এলাকার সুপারি ব্যবসায়ী প্রণব চ্যাটার্জি বলেন, ‘সুপারি কাঁচা বা শুকনা দুটিরই ব্যাপক চাহিদা। আমি প্রতিদিন প্রচুর পান ও সুপারি বিক্রি করি। প্রতি মঙ্গল ও শুক্রবার জেলার পাটকেলঘাটা থেকে পান ও সুপারি পাইকারি ক্রয় করি। কাঁচা সুপারি প্রতি হাজার ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা দরে কিনতে হয়। এছাড়া শুকনা সুপারি পাইকারি দর যাচ্ছে ৪৫০ টাকা কেজি দর।’
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন,পান ও সুপারি আমাদের দেশের অর্থকরি ফসল। তবে পাশের খুলনা বা বাগেরহাট জেলার তুলনায় এ জেলায় পান-সুপারি উৎপাদন কম হয়। তার পরও বছরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সুপারি উৎপাদন হচ্ছে সাতক্ষীরায়। এখন অনেকে বাড়ির বসতভিটার সঙ্গে সুপারি বাগান করছেন আবার কোনো কোনো কৃষক সাথী ফসল হিসেবেও সুপারির সঙ্গে বিভিন্ন ফসল করছেন। তবে পান-সুপারি খুবই লাভজনক ফসল।