দেশে প্রথমবারের মতো উদযাপন হতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার দিবস। আসছে ১৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ‘সেবা ও উন্নতির দক্ষ রূপকার, উন্নয়নে-উদ্ভাবনে স্থানীয় সরকার’ স্লোগান নিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হবে। এদিন গণভবনে দেশের ৮ হাজার জনপ্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
অনুষ্ঠান হবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। মহা এ আয়োজনে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। জনসচেতনতা তৈরি এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে প্রতিবছর দিবসটি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দিবসটি উদযাপনের কথা থাকলেও তা পিছিয়ে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়। দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাড়ে ৪ হাজারেরও বেশি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে এরই মধ্যে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। তবে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া জনপ্রতিনিধি এবং যাদের নামে মামলা রয়েছে, তারা আমন্ত্রণপত্র পাননি।
অনুষ্ঠান সফল করতে কর্মকর্তারা ছুটির দিনও কাজ করছেন। দিবস উদযাপনে যেন কোনো ধরনের কমতি না থাকে, তা নিশ্চিত করতে সদা তৎপর স্থানীয় সরকার বিভাগ। অনুষ্ঠান ঘিরে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য সতর্ক রয়েছে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব (ইউনিয়ন পরিষদ অধিশাখা) মোহাম্মদ ফজলে আজিম কালবেলাকে বলেন, দিবস উদযাপন সফল করতে আমরা ছুটির দিনও কাজ করছি। দিবসটির মাধ্যমে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে জনসাধারণের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দিবসটি উদযাপনের মাধ্যমে জনগণ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব ও কাজ সম্পর্কে জানতে পারবে। জনপ্রতিনিধিরাও তাদের দায়িত্বের বিষয়ে সচেতন হবে।
জানা গেছে, উপজেলা পর্যায়েও উদযাপন করা হবে স্থানীয় সরকার দিবস। আগামী ১৬, ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর তিন দিনব্যাপী ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস উন্নয়ন মেলা’ আয়োজন করবে স্থানীয় প্রশাসন। মেলায় প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন সব দপ্তর ও সংস্থা সরকারের বাস্তবায়িত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরবে। মেলায় নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান জনগণকে প্রদেয় সেবাগুলো তাৎক্ষণিকভাবে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। মেলায় যাতে বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশগ্রহণ করে, সে জন্য উপজেলা কমিটি মেলাকে আকর্ষণীয়, উপভোগ্য করার কাজ করে যাচ্ছে।
কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর মাঠপর্যায়ের অফিসগুলোকে স্থানীয় পর্যায়ের কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কমিটিকে সহায়তা দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। সিটি করপোরেশন এবং ওয়াসাগুলো অবস্থান অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় করে নিজ নিজ কর্মসূচি নেবে।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে শহরের প্রধান সড়কগুলো ফেস্টুন ও ব্যানার দিয়ে সুসজ্জিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দিবস উপলক্ষে দুই সিটিকে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও মশক নিধনের কর্মসূচিও হাতে নিতে বলেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।