মোঃ খলিলুর রহমান,সাতক্ষীরা :: শারদীয় দুর্গাপূজায় চিনি,গুঁড়া ও ধান দিয়ে ব্যতিক্রমী প্রতিমা তৈরি হয়েছে সাতক্ষীরার কলারোয়ায়। এমন শৈল্পিক কারুকাজে মুগ্ধ হচ্ছেন ভক্ত ও দর্শনার্থীরা।কলারোয়ার মুরারীকাটি উত্তরপাড়া পালপাড়া শারদীয় দুর্গাপূজা মন্দিরে তৈরি হয়েছে চিনিগুঁড়া ধানের সুনিপুণ বিন্যাসে প্রতিমা। ইতোমধ্য শেষ হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। সোনালী বর্ণের এ প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহার হয়েছে ১০০ কেজি চিনিগুঁড়া ধান। শিল্পীর ছোয়ায় তৈরি দুর্গা, কার্তিক, গণেশ, সরস্বতী, লক্ষ্মী, অসুরের প্রতিমা দেখে মনে হচ্ছে যেন সোনায় মোড়ানো। লাখ টাকার খরচে প্রতিমা তৈরিতে সময় লেগেছে এক মাস। শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হওয়ার আগেই দর্শনার্থীদের ভিড় জমেছে এখানে। দর্শনার্থীরা এমন ভিন্ন পন্থায় তৈরি প্রতিমা দেখে আনন্দিত। আগামী ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। ২৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ এ ধর্মীয় উৎসব।চিনিগুঁড়া ধান দিয়ে আকর্ষণীয় এই প্রতিমা তৈরির কারিগর হলেন প্রহ্লাদ বিশ্বাস। তিনি বলেন, সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখে প্রতিমা তৈরির কার্যক্রম শুরু করেন। এর মধ্যে অক্টোবর মাসের ১ তারিখে মোটামুটি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পেরেছেন। চিনিগুঁড়া ধান দিয়ে ১৮টি প্রতিমা তৈরি করতে সময় লেগেছে এক মাস। এখানে রং তুলির কাজ চলছে। প্রহ্লাদ আরও বলেন, কার্তিক, গনেশ সরস্বতী, লক্ষ্মী, অসুর, মহিসুরসহ ১৮টি প্রতিমা তৈরির জন্য প্রথমে বাঁশ, কাঠ, পাট ও মাটি দিয়ে কাঠামো করা হয়েছে। তৈরিকৃত কাঠামোতে নকশি পাড় বসানোর পর একটি করে বসানো হয়েছে চিনিগুঁড়া ধান। কিছু কিছু অংশে স্প্রে করা হয়েছে। প্রতি মুহূর্তে বিভিন্নস্থান থেকে দর্শনার্থীরা এখানে আসছেন এবং তারা এমন আকর্ষণীয় প্রতিমা দেখে প্রশংসা করছেন। মুরারীকাটি পালপাড়া পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি জীবন কুমার ঘোষ বলেন, ১৯৮৩ সাল থেকে এই মণ্ডপে তারা পূজা উদযাপন করে আসছেন। ৪০ বছর পূর্ণ হওয়া উপলক্ষ্যে ভিন্নতা রেখে চিনিগুঁড়া ধান দিয়ে প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। এর আগেও কয়েকবার ভিন্নধর্মী ও আকর্ষণীয়ভাবে প্রতিমা তৈরি করে আলোচনায় এসেছিলেন তারা। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, অন্যান্য বছরে তুলনায় এবার তৈরিতে খরচ বেশি হলেও প্রতিমা দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় হয়েছে। চিনিগুঁড়া ধান দিয়ে জেলাতেই প্রথম এখানে প্রতিমা তৈরি হয়েছে। কারিগর একটা করে ধান সুনিপুণভাবে থরে থরে সাজিয়ে প্রতিমাকে সুন্দর করে তুলেছেন। দর্শনার্থী মিলন বিশ্বাস বলেন, দুর্গা উৎসব শুরু হওয়ার আগেই পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে মুরারীকাটি পূজা মণ্ডপ ঘুরে দেখা হয়েছে। সেখানকার তৈরিকৃত প্রতিটি প্রতিমা দেখে মনে হচ্ছে যেন সোনায় মোড়ানো। এত সুনিপুণ কারুকার্য দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। সাতক্ষীরার পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, প্রতি বছর এ জেলাতে বাঁশ, বেতসহ নানা জিনিস দিয়ে আকর্ষণীয় প্রতিমা তৈরি করা হয়। তবে এবার কলারোয়ার মুরারীকাটি পাল পাড়ায় তৈরিকৃত প্রতিমা সর্বাধিক আকর্ষণীয় করা হয়েছে। এ প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১০০ কেজি চিনিগুঁড়া ধান। এমন ভিন্নধর্মী প্রতিমা তৈরি জেলায় এই প্রথম।