নিজস্ব প্রতিবেদকঃ এই এপ্রিল মাসে দেশের অন্যান্য উপজেলার ন্যায় পবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষনা করা হবে। নির্বাচনের তপশিল ঘোষনার পূর্বেই পবায় নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। তপশিল ঘোষনা না হলেও ভোটের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে শুরু করছেন সম্ভাব্য প্রাথীরা। ইতোমধ্যে ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা ও দোয়া চেয়ে ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন টাঙ্গিয়ে জানান দিচ্ছেন তারা। সেইসাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও চলছে জোরতাল প্রচারণা।
নির্বাচন ঘিরে মাঠ-ঘাট, হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লা ও চায়ের আড্ডায় এখন জনসাধারণের মধ্যে চলছে আলোচনা সমালোচনা। রয়েছে নানান জল্পনা-কল্পনা। এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ নিজ থেকেই স্থানীয় জনগণের মুখে মুখে প্রচারণাসহ দোয়া চেয়ে জনগণের দারপ্রান্তে যাচ্ছেন কর্মী ও সমর্থকরা। বিশাল এই জনসংখ্যার উপজেলায় কে হবেন আগামী উপজেলা পরিষদের কর্নধার তথা চেয়ারম্যান, এই গুঞ্জন এখন সবার মুখে মুখে।
এবারের পবা উপজেলা নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলী ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ওয়াজেদ আলী খাঁনসহ এ পর্যন্ত মোট ৯জন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন বলে প্রচারণা শুরু করেছেন। অন্যান্যরা হলেন অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল, ফারুক হোসেন ডাবলু, সাইফুল বারী ভুলু মৌলভী, প্রভাষক আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, ইমদাদুল হক ইমদাদ ও ডেভিড রিচার্ড মুর্মু।
আসন্ন পবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার ভাইস চেয়ারম্যান থেকে চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান জনপ্রিয় নেতা রাজশাহী জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পবা উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ওয়াজেদ আলী খাঁন। ওয়াজেদ আলী খাঁন পবা উপজেলার বড়গাছী ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা হলেও তিনি নওহাটা পৌর এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সক্রিয় রাজনীতির সাথে জড়িত থেকে উপজেলার সর্বস্তরের জনগণের সেবায় নিয়োজিত আছেন তিনি। তিনি আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে সকলের সহযোগিতা ও দোয়া চান। বর্তমানে তিনি নওহাটা মহিলা ডিগ্রী কলেজে শিক্ষকতা করছেন।
রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী একজন মানুষ তিনি। তিনি ছাত্রজীবনে ছাত্র সংসদ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, পবা উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি রাজশাহী জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক, দারিদ্র সমাজ উন্নয়ন সংস্থা’র নির্বাহী পরিচালক, মুক্তিযুদ্ধ সংহতি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, দি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নলীগ অব বাংলাদেশ (কালব) ব্যবস্থাপনা পরিষদের রাজশাহী বিভাগ (খ-অঞ্চল) এর ডিরেক্টর, বেতার নাট্যকার ও নাট্যশিল্পী সংসদ (বেনানাশিস) এর আঞ্চলিক পরিষদের সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম (আসাফো) রাজশাহীর আহ্বায়ক, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
নির্বাচনে অংশগ্রহন সম্পর্কে ওয়াজেদ আলী খাঁন এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি পবা এলাকার সন্তান। উপজেলাবাসীর পূর্ণ সমর্থনে এবং তৃনমূল পর্যায়ের জনগণের চাওয়াতেই তিনি নির্বাচন করতে ইচ্ছে পোষণ করেছেন। তিনি সর্বদা জনগণের পাশে আছেন। জনগণের পাশে থেকে তাদের সাথে যোগাযোগ ও সব কিছুর খোঁজ খবর রাখেন। তিনি বলেন, বর্তমানে তিনি দলীয় নেতাকর্মী ও তৃনমূলের জনগণের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। সেইসাথে তিনি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন বলে উল্লেখ করেন এবং কল্যানের জন্য কাজ করতে পবা বাসীর দোয়া ও সহযোগিতা প্রার্থনা করেন।
তিনি আরো বলেন, জনগণের সেবক হিসেবে তিনি যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, চেয়ারম্যান হিসেবে পাশে থেকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চান। কথার মাধ্যমে নয়, কাজের মাধ্যমে সকল সামাজিক সমস্যা দূরীকরণে সুখে-দু:খে সর্বদা জনগণের পাশে থেকে সেবা করতে চান। আমি সব সময় উপজেলাবাসীর পাশে আছি ও জনকল্যানের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। স্মার্ট ও উন্নত উপজেলা পরিষদ গড়ে তুলতে অঙ্গীকারাবদ্ধ তিনি। তিনি আরো বলেন, উপজেলায় বেকার সমস্যা সমাধানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মাদক ও সন্ত্রাস দূরীকরণ এবং বালাবিবাহ প্রতিরোধসহ নানা সামাজিক কাজে সর্বদা কাজ করছেন। আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সকলের দোয়া ও সমর্থন প্রত্যাশা করেন তিনি।
তিনি আরোও বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার সরকার গর্ভকালিন ভাতা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা, শিক্ষা বৃত্তি, ১০টি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন সহ বিভিন্ন ভাবে দেশের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। তেমনি ভাবে মেঘা প্রকল্প পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্নফুলিট্যানেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, ডেল্ট্রা প্ল্যানের মাধ্যমে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে মুজিব সৈনিক হিসেবে দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে তাঁর নেতৃত্বে স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে “রূপকল্প ভিশন ২০৪১” বাস্তবায়নে অংশীদার হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, মাদক একটি ভয়াবহ সমস্যা। মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মাদক-সন্ত্রাসমুক্ত পবা গড়তে চান। মাদকের রোষানলে পড়ে যুব সমাজ ধংস হয়ে যাচ্ছে। যেখানেই মাদক সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পবা উপজেলার একাধিক জনগণ বলেন, ওয়াজেদ আলী খাঁন একজন শিক্ষিত পরোপকারী সদা হাস্যজ্জল ও সাংস্কৃতিমনা উদার মনের মানুষ। বিপদে আপদে তাকে কাছে পাওয়া যায়। মনের কথা সহজে বলা যায়, অভাব অভিযোগ করা যায়। তিনি সব সময় জনগণের সাথে মিশে থাকে। তার কোন অহংকার নেই। উপজেলার জন সাধারণের যে কোনো ছোট-বড় সমস্যায় দ্রুত ছুটে গিয়ে সমাধান করাসহ নানা উন্নয়ন কর্মকান্ডে জড়িত থাকেন। একজন নেতার যেসব গুনাবলী থাকা দরকার তার প্রতিটিই আছে। প্রতিটি স্থানেই রয়েছে তার পদচারণা। এরকম স্বচ্ছ মানুষের হাতে নেতৃত্ব আসলে অবহেলিত উপজেলা এগিয়ে যাবে। তিনি গরীবের সুখে দুঃখে পাশে থাকেন। এমন পরপোকারী নেতাকে উপজেলাবাসীর সেবা করার সুযোগ দিতে চান তারা।
উল্লেখ্য পবা উপজেলা রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের চারিদিকে বেষ্টিত ৩৩৯ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে। উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৮৫৭ জন।এরমধ্যে পুরুষ এক লাখ ৮৬ হাজার ৩৯৬ জন এবং মহিলা এক লাখ ৮২ হাজার ৪৬১ জন। উপজেলায় ২টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন, ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৮৪টি, ভোট কক্ষের সংখা ৬২৬টি, মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৬০ হাজার ৮৩৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৩০ হাজার ৯০১ জন ও মহিলা এক লাখ ২৯ হাজার ৯৩৪ জন এবং হিজড়া ৩ জন।