মুশফিক হাওলাদার,বিশেষ প্রতিনিধিঃ মাত্র কয়েক দিন আগেও যেখানে লাঠি হাতে অধিকার আদায়ে নেমেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এখন সেখানেই তারাই এবার ফুটপাতের আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছেন। আবার কেউ কেউ সড়কের মাঝখানে দাঁড়িয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছেন।
তারা কেউই ট্রাফিক বা পৌরসভার পরিচ্ছন্ন বিভাগে চাকরি করেন না। তারপরও পৌর শহরের সৌন্দর্য বাড়াতে ও সড়কের যান চলাচলের শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করছেন এসব ছাত্ররা।
ছাত্রদের এ রকম কার্যক্রমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ভোলার লালমোহনের সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা।
সরকার পতনের পরে আইনশৃঙ্খলা ও প্রশাসনের ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে বুধবার থেকে উপজেলার সদর রোডে শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
পাশাপাশি জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সালাম সেন্টুসহ সাংবাদিকগন , উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও আনসার-ভিডিপির সদস্যরাও কাজ করেন। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ভূমিকার পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন কর্মীরও দায়িত্ব পালন করেন। লালমোহন পৌর শহরের মোড়ে মোড়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে লালমোহনে কয়েকদিন ধরে সাধারণ মানুষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এসময় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলাম, ঐক্য আন্দোলনের নেতাকর্মীদের মিছিল স্লোগান ও সমাবেশ করে নিজ দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।
কয়েকদিন ধরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সড়কে পরে থাকা আবর্জনা পরিষ্কারের কাজে দেখা না যাওয়ায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল, চিপসের খালি ও বিস্কুটের প্যাকেটসহ বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনা ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত এই শিক্ষার্থীরা।
পৌর সদরের থানা মোড়ের বাসস্ট্যান্ড, চৌরাস্তাসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানের রাস্তায়, রাস্তায় দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীরা যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করেছে। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লালমোহন উপজেলার ২০ সমন্বয়।
এসময় ৩ জন সমন্বয় বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশটা দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে তাই শহীদ ভাইদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে। দায়িত্ব পালনে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা কামনা করেন সমন্বয়রা।
জানা গেছে, দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষার্থীদের বাড়ি লালমোহন পৌরসভা ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে। ছাত্ররা যেখানে সেখানে যেকোনো যাত্রীবাহী গাড়ি, ট্রাক-লড়ি, রিকশা, মোটরসাইকেল দাঁড়াতে দিচ্ছে না। মোটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেট না থাকলে হেলমেট পরার পরামর্শ দিচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগকে প্রশংসা করেন বাজারের ব্যবসায়ী ও পথচারীরা।