গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা পল্লী বিদ্যুৎ, সদর উপজেলার বিকেবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় চাকরি স্থায়ীকরণ, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, মজুরি বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবিতে অন্তত ১১টি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ সময় কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে দীর্ঘ যানজটে পড়েন যাত্রীরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে ইন্টারস্টাফ অ্যাপারেলস লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার সামনে চাকরিপ্রার্থীরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এ সময় প্রায় আধ ঘন্টা ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।
চাকরিপ্রার্থীরা ইন্টারস্টাফের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় রেখে তাদের নতুন করে কোনো পুরুষ শ্রমিক নিয়োগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। কারখানাটি শুধুমাত্র নারী শ্রমিকদের নিয়োগ দিয়ে আসছে এবং পুরুষদের বঞ্চিত করছে। এক পর্যায়ে চাকরি না পাওয়ায় বিক্ষোভে উত্তেজিত হয়ে চাকরি প্রার্থীরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে এবং কারখানার দিকে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এ সময় কারখানার ভেতরে থাকা শ্রমিকরাও ছাদ থেকে তাদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। প্রায় আধা ঘণ্টার প্রচেষ্টার পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয় এবং শ্রমিকদের কারখানার ভেতরে ফেরত পাঠানো হয়।
এদিকে, সদর উপজেলার বিকেবাড়ি এলাকায় চাকরি স্থায়ীকরণ, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, মজুরি বাড়ানোসহ ২১ দফা দাবিতে ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফার্মাসিউক্যাল নামের ওষুধ কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি করে আন্দোলনে নামে। এ সময় শ্রমিকরা কারখানা ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। পরে ১১ টার দিকে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন শ্রমিক প্রতিনিধিরা। এ ছাড়া বেতন বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবিতে টঙ্গী বাজার এলাকায় বিক্ষোভ করে বাটা সু কোম্পানির শ্রমিকরা। এদিকে গাজীপুরের ভোগড়ায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে মাসট্রেড ইন্টারন্যাশনাল পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছে। শ্রমিক অসন্তোষে দেখা গেছে তেলিপাড়া এলাকায় ক্লোটেক্স অ্যাপারেল কারখানায়ও।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের-২ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহমেদ বলেন, নতুন চাকরির দাবি, চাকরিতে নারী বৈষম্য দূর করা, বেতন ভাতা বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবিতে ১১টি কারখানায় শ্রমিক আন্দোলন হয়েছে। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছে।