সাইফুর রহমান শামীম,, কুড়িগ্রাম।। কুড়িগ্রামে আলিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে চলমান আলিম পরীক্ষায় (এইচএসসি সমমান) সাধারণ শাখায় ইতিহাস বিষয়ে দুটি ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একই দিনে একই বিষয়ে ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ায় খাতা মূল্যায়ন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ওই কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা।
গত বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) আলিম শ্রেণির ইতিহাস বিষয়ের পরীক্ষায় নির্ধারিত ‘গ’ সেটের (জমজম) সঙ্গে একই বিষয়ে ‘ঘ’ (জয়তুন) সেটে পরীক্ষা নেওয়ার এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী কয়েকজন পরীক্ষার্থীসহ আলিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও কেন্দ্র সচিব মাওলানা মো. নুর বখত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পরীক্ষায় অংশ নেওয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসার ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেওয়ায় তারা চিন্তায় রয়েছেন। পরীক্ষার উত্তরপত্রে সেট কোড পূরণের উপায় ছিল না। ফলে কার উত্তরপত্র কোন সেটের প্রশ্নে মূল্যায়ন করা হবে, তা নিয়ে মানসিক চাপে রয়েছেন তারা। এমনকি এ ঘটনায় ফলাফল স্থগিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন পরীক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শির্ক্ষাথী বলেন, ‘ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ও ঢাকায় থাকা আমার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি যে তারা ‘গ’ সেটের প্রশ্নপত্রে ইতিহাস পরীক্ষা দিয়েছে। কিন্তু আমাদের কেন্দ্রে ‘গ’ ও ‘ঘ’ সেটে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের এমন ভুলে আমরা বিপদে পড়েছি। এর সমাধানের ব্যবস্থা না হলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো।’
কেন্দ্র সচিব মাওলানা নুর বখত বলেন, ‘বুধবারের ইতিহাস পরীক্ষা নির্ধারিত ‘গ’ সেটে নেওয়ার পাশাপাশি ভুলবশত কিছু শিক্ষার্থীকে ‘ঘ’ সেটও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষা শেষে বিষয়টি বুঝতে পারে কেন্দ্র কমিটি। তখন আর তাৎক্ষণিক সংশোধনের উপায় ছিল না।
তবে এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই জানিয়ে কেন্দ্র সচিব বলেন, ‘ভুল বুঝতে পারার পর আমি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলেছি। বিষয়টির সমাধান চেয়ে লিখিত আকারে মেইল করেছি। উভয় সেটে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ফলে পরীক্ষার্থীদের চিন্তার কারণ নেই।’
কাদের অবহেলায় এমন ভুল হয়েছে জানতে চাইলে কেন্দ্র সচিব বলেন, ‘কেন্দ্র সচিব হিসেবে এই দায় প্রথমত আমার। কিন্তু পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সদস্যদের অবহেলায় এই ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক শিক্ষক ও এক কর্মচারীকে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’ তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন কেন্দ্র সচিব।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিইও) শামসুল আলম বলেন, ‘এটা কোনও ভাবেই কাম্য নয়। এটি দায়িত্বে অবহেলার মধ্যে পড়ে এবং এর দায় কেন্দ্র সচিবের। ভুল সেটে পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করে রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বরসহ বিষয়টি বোর্ডকে লিখিতভাবে জানালে সমস্যার সমাধান হতে পারে।’
দায়ীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে ডিইও বলেন, ‘এতবড় একটা ঘটনা। অথচ কেন্দ্র সচিব আমাকে কিছু জানাননি। পরীক্ষা কমিটির সভাপতি এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পরেন।’
জানতে চাইলে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা যথাযথভাবে সেট কোড পাঠিয়েছি। তাদের যথাযথভাবে পরীক্ষা নেওয়ার কথা। আমি বিষয়টি অবগত নই, তারা আমাকে জানাননি। বিষয়টি নিয়ে আমি কথা বলবো।’
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2025 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.