মোঃ মুশফিক হাওলাদার বিশেষ প্রতিনিধিঃ
খেজুর গাছকে বলা হয় ‘মধুবৃক্ষ’।ভোলার লালমোহনে খেজুর রস আহরণে ব্যস্ত গাছিরা এ গাছ থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে রস আহরণ করা হয়। পুরো বিষয়টি বিস্ময়কর। প্রতি বছর হেমন্তেই শুরু হয় গাছিদের মহাব্যস্ততা। গোটা শীতকাল তাদের এই ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যায়। গ্রামীণ জনপদে খেজুর গাছ ও গাছিদের নিবিড় সম্পর্ক চোখে পড়ে। অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে ঐতিহ্যের খেজুর গাছ কেটে গাছিরা রস আহরণ করেন। এ রসের ব্যাপক কদর রয়েছে। বিশেষ করে শীতকালে গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি ঘরেই খেজুর রস দিয়ে চলে পিঠা-পুলি তৈরির হরেক রকম আয়োজন।
সাধারণত অযত্ন ও অবহেলায় বেড়ে ওঠে খেজুর গাছ। কিন্তু শীত এলেই অনাদর ও অবহেলার খেজুর গাছের কদর বাড়ে। কারণ খেজুর গাছ থেকে আহরণ করা হয় সুমিষ্ট ও মূল্যবান রস। যা দিয়ে গুড়-পাটালি তৈরি করা হয়। খেজুরের রস-গুড়ের বেশ যশ ও খ্যাতি রয়েছে। খেজুর রস আহরণের বিষয়টি বেশ বিস্ময়ের। শুরুতে গাছি এ গাছের মাথার এক পাশে কেটে (ঝুড়ে) ফেলেন। এক সপ্তাহ পর ঝোড়া অংশ কেটে (চেছে) সমৃণ করেন। এরপর এক সপ্তাহ পর ধারালো স্যানদা (স্যান) দিয়ে সেই অংশ চেছে বাঁশের গোঁজা বা নলের সঙ্গে হাঁড়ি ঝোলানো হয়। রস আহরণের জন্য এ কাজটি করা হয় দুপুরের পর থেকে। সারারাত ফোঁটা ফোঁটা রস হাঁড়িতে পড়ে। সকালে গাছি সেই হাঁড়িভর্তি রস গাছ থেকে নামান। আমাদের দেশে খেজুর গাছ অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। পরিকল্পিতভাবে খেজুর গাছ লাগিয়ে গুড়-পাটালি উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ও সম্ভব বলে মনে করেন সচেতন মহল। লালমোহন উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের গাছিরা খেজুর গাছ কেটে রস আহরণে মহাব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। লর্ড হার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের পেয়ারী মোহন গ্রামের গাছি আলতাব হোসেন (৫০) বলেন, ‘আমি প্রায় ২০ বছর ধরে গাছ কাটছি। শীতকালে সংসার ভালো চলে। রস ও গুড়-পাটালির দাম বেশ ভালো পাই।’ উপজেলা কৃষি অফিসার এ. এফ. এম. শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘খেজুর গাছ একটি সম্ভাবনাময় বৃক্ষ। খেজুরের রস, গুড়-পাটালির দামও আশানুরূপ। ফলে এটি বেশ লাভজনক গাছ।’
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.