লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের সদর আধুনিক হাসপাতল থেকে পিতার পরিচয় দিয়ে এক নবজাতককে চুরি করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সকালে নবজাতকদের বিশেষ সেবা ইউনিট থেকে এ চুরির ঘটনা ঘটে। অবশেষে গাইনী ওয়ার্ডের কেবিনে ভর্তি থাকা মেয়ে জন্ম দেয়া এক মায়ের কুল থেকে ৫ ঘন্টা পর চুরি যাওয়া ছেলে নবজাতকটিকে উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের একাধিক টিম তদন্ত শুরু করেছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাসুক আলী জানান, দু’টি শিশুই মঙ্গলবার সকালে জন্ম হয় তাদেরকে নবজাতকদের বিশেষ সেবা ইউনিটে রাখা হয়।
নবজাতকটি কান্নাকাটি করায় একজন তার অভিভাবক পরিচয় দিয়ে নার্সের কাছ থেকে নিয়ে যায় পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ জানতে পারে তিনি প্রকৃত অভিভাবক নন পরে হাসপাতালেই শিশুটিকে পাওয়া যায়। ঘটনাটি কি ভুলবশত হয়েছে, নাকি দুরভিসন্ধিমূলকভাবে করা হয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আমিনুল হক সরকার জানান মিসিং হওয়া শিশুটি পাওয়া গেছে। তাকে তার প্রকৃত মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে তিনি বলেন, যার কাছে পাওয়া গেছে তার মেয়ে শিশুটিও পাওয়া গেছে তাকেও তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
যে নিজের সন্তানের বাবা পরিচয় দিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সেটি ইচ্ছাকৃত ভুল না কি অনিচ্ছাকৃত হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ওই নবজাতকের নানী সফিনা খাতুন ও ফুফু সামছুন্নাহার জানান, ভোর সাড়ে ৬টায় নবজাতকটি স্বাভাবিকভাবে ডেলিভারী হয়। এরপর তার কান্না থামছিলনা এক পর্যায়ে তাকে নিয়ে নবজাকতদের বিশেষ সেবা ইউনিটে ভর্তি করা হয় সেখান থেকে কিছু ঔষধ নিয়ে আসতে বলা হয় ঔষধ নিয়ে যাওয়ার পর ঝাড় দেয়ার কথা বলে তাদের বের করে দেয় দায়িত্বরতরা। পরে তারা ভিতরে ঢুকে দেখাতে পান নবজাতকটি নেই। দায়িত্বরতরা জানায়, তার বাবা এসে দুধ খাওয়ানোর কথা বলে নিয়ে গেছে অথচ এ সময় তার বাবা হাসপাতালে আসেইনি তারা বলেন।
শিশুটি সকাল ৯টায় চুরি গেলেও গাইনী ওয়ার্ডের একটি কেবিনে এক মহিলার কাছে বেলা ২টায় পাওয়া যায় নবজাতকটির বাবা দেলোয়ার হোসেন জানান, তিনি বাড়িতে ছিলেন ছেলে হয়েছে খবর পেয়ে সকালে হাসপাতালে এসে জানতে পারেন তার সন্তান চুরি হয়ে গেছে। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন। সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় প্রসব বেদনা নিয়ে সদর আধুনিক হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি হন শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার মড়রা গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী ফেরদাউস আক্তার। একই দিন রাত সোয়া ৯টায় প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হন আজমিরীগঞ্জ উপজেলার মাসুম মিয়ার স্ত্রী আকলিমা বেগম।
ফেরদাউস আক্তার মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টায় পুত্র সন্তান প্রসব করেন আর তার দেড়ঘন্টা পূর্বে ভোর ৫টায় মেয়ে সন্তান প্রসব করেন আকলিমা বেগম। দু’টি শিশুকেই সকালে নবজাতকদের জন্য বিশেষ সেবা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে কান্নাকাটি করার এক পর্যায়ে মেয়ে শিশুর বাবা মাসুম মিয়া ছেলে শিশুটি নিজের বলে পরিচয় দিয়ে নিয়ে যান। নেয়ার সময় ছেলে শিশুর মা এবং বাবার নামও তিনি বলেন পরে ছেলে শিশুটির প্রকৃত স্বজনরা তাকে সিটে গিয়ে না পেলে হুলস্তুল শুরু হয়।
পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একসাথে তদন্ত শুরু করে শেষ পর্যন্ত নবজাতকদের বিশেষ সেবা ইউনিটে ভর্তি মেয়ে শিশুটির অভিভাবককে খোঁজে পাওয়া না গেলে রহস্য বেরোতে থাকে। মেয়ে শিশুটির সূত্র ধরেই বেলা ২টায় মেয়ে শিশুর মা আকলিমা বেগমের কুল থেকে ছেলে শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিকেল ৪টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছিল। তবে কাউকে আটক করা না হলেও দু’পক্ষের কাউকেই হাসপাতাল ছাড়তে দেয়া হয়নি।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.