মোঃ খলিলুর রহমান সাতক্ষীরা ::
করোনায় বেড়েছে সাতক্ষীরা প্রবীণ আবাসন কেন্দ্রে (বৃদ্ধাশ্রমে)। গত একবছরে বৃদ্ধাশ্রমটিতে আরও ১০জন প্রবীণ আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমানে বৃদ্ধাশ্রমটিতে ২২জন প্রবীণ আশ্রয় নিলেও এদের অধিকাংশ এখনও পর্যন্ত পাননি করোনার টিকা।
খবর রাখছেন না স্বজনরাও। তবে স্বজনদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না থাকলেও করোনা আতঙ্কে চরম অনিশ্চয়তার ভিতরে দিন পার করছেন সাতক্ষীরা শহরের প্রবীণ আবাসন কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া প্রবীণরা। ২০১৫ সালের পহেলা জুলাইয়ে ‘নবীনদের উদ্যোগে প্রবীণদের জল দান, ক্ষুধার্তকে অন্ন; আশ্রয়হীনকে আশ্রয় দান, ইহাই মানব ধর্ম’গান নিয়ে আরা সংস্থার উদ্যোগে শহরের সিটি কলেজের পেছনে হাতেগোনা কয়েকজন ব্যক্তি নিয়ে ৩ কাটা জমির উপরে গড়ে ওঠে প্রবীণ আবাসন কেন্দ্র (বৃদ্ধাশ্রম)। তবে জায়গা স্বল্পতার কারণে সিটি কলেজ থেকে ২০১৭ সালে শহরের মাগুরা এলাকায় (২৫ কাটা জমি মাস প্রতি সাড়ে ১৩ হাজার টাকা ভাড়া) প্রবীণ আবাসন কেন্দ্রকে সরিয়ে নেওয়া হয়। বৃদ্ধাশ্রমটি স্থাপিত পরে থেকে নানা টানাপোড়নের মধ্যে চললেও বৃদ্ধাশ্রমটি সাতক্ষীরা জেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের শেষ বয়সের ঠিকানা ও আশ্রয় হয়ে উঠেছে।
চরম অনিশ্চয়তা নিয়ে যারাই এ বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নিয়েছেন, তারাও খুঁজে পেয়েছেন তাদের শেষ বয়সের নিরাপদ ও নিশ্চিত আবাসস্থল। তবে করোনা আতঙ্কে এখন তিনবেলা পেট ভরে খাওয়াটা তাদের অধরা স্বপ্নতে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে বৃদ্ধাশ্রমে থাকা ২২জন প্রবীণদের জন্যে বাইরে যে অনুদান আসতো সেটা রীতিমতো বন্ধ হয়ে গেছে করোনা ভাইরাসের কারনে। স্থানীয়ভাবে হাতেগোনা কয়েকজন ব্যক্তির অল্পকিছু অনুদান পেলেও সেটি প্রয়োজনের তুলনায় অতিনগণ্য। প্রবীন সম্বলহীন অসহায় মানুষগুলো বুকে অনেক কষ্ট নিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নিলেও করোনা ভাইরাসের কারণে বৃদ্ধাশ্রমের আনন্দের সংসারটাকে বিষাদে পরিণত হয়ে গেছে। এবিষয়ে বৃদ্ধাশ্রমের দেখভালের দায়িত্বে থাকা নজরুল ইসলাম জানান, করোনার শুরুর সময় বৃদ্ধাশ্রমটিতে ১৬জন প্রবীণ আশ্রয় নিয়েছিলেন। এর ভিতরে চারজন মারা যান। তবে এই করোনাকালীন সময়ে বৃদ্ধাশ্রমটিতে ১০জন প্রবীণ আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমানে ২২জন প্রবীণের অধিকাংশ করোনার টিকা গ্রহণ করেননি জাতীয় পরিচয়পত্রের জটিলতা ও প্রবীণদের টিকাকেন্দ্রে যেতে পারার অক্ষমতার কারণে। একারনে সংশ্লিষ্ট দফতরকে বৃদ্ধাশ্রমটিতে এসে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রবীণদের জন্য বাইরে থেকে যে অনুদানটা আসতো সেটা করোনার কারনে বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও স্থানীয় পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তির সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে চলে বৃদ্ধাশ্রমটি। যেটা প্রয়োজনের চাইতেও অনেক কম। এরভিতরে আশ্রয়িত প্রবীণদের তিনজন অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। তাদের চিকিৎসাসেবায় সহায়তা করেননা তাদের পরিবারের সদস্যরা। যতোটুকু সম্ভব হয় মানুষের কাছে হাত পেতে নেওয়ার চেষ্টা করি। একারণে করোনার টিকার ব্যবস্থা করাসহ বৃদ্ধাশ্রমটির পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। এবিষয়ে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা: মো. হুসাইন শাফায়াত বলেন, বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয়িত মানুষগুলো এখনও পর্যন্ত যে টিকা পাননি সেটা সম্পর্কে অজ্ঞাত তিনি। যতোদ্রæত সম্ভব বৃদ্ধাশ্রমে একজন প্রতিনিধি পাঠিয়ে বৃদ্ধাশ্রমের আশ্রয়িত মানুষগুলোর টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানান তিনি।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.