মোঃ আউয়াল হোসেন পাটওয়ারী, রামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ “আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা-ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে- মামার বাড়ে যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে-আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে- রঙিন করি মুখ...।”
পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পংক্তিগুলো বাস্তব রূপ পেতে বাকি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে। প্রকৃতির পালাবদলে রামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আম গাছগুলোতে মুকুলের মিষ্টি সুবাসে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি। জানান দিচ্ছে মধুুমাসের আগমনী বার্তা। দক্ষিণা বাতাসে সেই সুমিষ্ট ঘ্রাণ মানুষের মনকে বিমোহিত করে তুলছে। মৌমাছিরাও আসতে শুরু করেছে মধু আহরণে। গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল।
কোকিলের সুমিষ্ট কুহুতালে ফাগুনের উত্তাল বাসন্তী হাওয়া দিচ্ছে দোলা। গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে মৌ মৌ ঘ্রাণ। আগুন ঝরা ফাগুনে গাছে গাছে জেগে উঠছে সবুজ পাতা। সোনালি হলুদ রঙের আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ। মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসেছে মনের আনন্দে। এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে খুলনা মহানগরীর শের-এ-বাংলা রোডের একটি আম গাছে। দৃশ্যটি যে কাউকেই কাছে টানবে। প্রকৃতিতে শীতের প্রকোপ এবার কিছুটা কম থাকায় বেশ আগেভাগেই মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে রামগঞ্জ শহর থেকে শুরু করে গ্রামের আম বাগানগুলো। থোকা থোকা মুকুলেরভারে ঝুলে পড়েছে আম গাছের ডালপালা। বসন্তের নানা ফুলের সঙ্গে সৌরভ ছড়াচ্ছে গাছে গাছে আমের মুকুল। আর এ মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি। মনকে করে তুলছে আরো প্রাণবন্ত।
রামগঞ্জ পৌরশহর ও বিভিন্ন ইউনিয়নে মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, আম বাগানের সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিকরা।
এদিকে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলোতে। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন। আম্রæপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, ক্ষিরসাপা অন্যতম। ইতিমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে জানান বাগান মালিকরা।
কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর গাছে মুকুলের পরিমাণ বেশি। আমচাষী এবং সংশ্লিষ্ট কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং সময়মতো পরিচর্যা হলে চলতি মৌসুমে আমের ভালো ফলন হবে। আর এ কারণেই আশায় বুক বেধে আমচাষীরা শুরু করেছেন পরিচর্যা। তাদের আশা, চলতি মৌসুমে তারা আম থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। এ সময় শিলাবৃষ্টি হলে আমের মুকুলের ক্ষতি হবে। এর উপর সামনে কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। তাই আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কাও কাজ করছে। তবে পরিস্থিতি অনূক‚লে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলে জানান তিনি।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.