খলিলুর রহমান, সাতক্ষীরা :
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার একটি মাদরাসা ভিত্তিক এতিমখানায় কাগজে-কলমে এতিম থাকলেও বাস্তবে নেই। এতিমদের নামে বরাদ্দ করা টাকা তুলে ভাগাভাগি করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক, কমিটির সদস্য ও সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
আশাশুনি উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের গাজীপুর কুড়িগ্রাম আজিজিয়া এতিমখানায় ১৬ জন এতিমের নামে ৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এতিমখানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরে উত্তোলন করা হয় সেই টাকা। প্রত্যেক এতিমের জন্য মাথা পিছু মাসিক বরাদ্দ দুই হাজার টাকা। এর মধ্য থেকে খাদ্য বাবদ ১৬০০ টাকা, পোশাক বাবদ ২০০ টাকা, ওষুধ ও অন্যান্য ব্যয় ২০০ টাকা করার শর্ত রয়েছে।
সরেজমিনে আশাশুনি উপজেলার গাজীপুর কুড়িগ্রাম আজিজিয়া এমিতখানায় দেখা যায়, ১৯৭০ সালে গাজীপুর কুড়িগ্রাম আজিজিয়া মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১৯৯২ সালে স্থাপন করা হয় এতিমখানা। বর্তমানে এতিমখানাটি বন্ধ। কক্ষগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।সেখানে নেই কোনো ছাত্র।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে এতিমখানটি। এতিমদের নামে বরাদ্দ করা টাকা উত্তোলন করে শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা ভাগাভাগি করে খাচ্ছে। মাদরাসার শিক্ষকরা বলেন, এতিমখানার সভাপতি মাদরাসার অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক শহিদুল্লাহ্ হাবীবী। সবকিছু দেখভাল করেন সভাপতি মিজানুর রহমান। আমরা বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না।
মাদরাসার অধ্যক্ষ ও এতিমখানার সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, করোনার কারণে এতিমখানাটি কিছু দিন বন্ধ ছিল। বর্তমানে চালু আছে। তবে কতজন এতিম শিক্ষার্থী রয়েছে তার সংখ্যা বলতে পারেননি তিনি।
১৬ জন এতিমের বরাদ্দের ৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা কী করলেন? প্রশ্নে সভাপতি বলেন, ঝড়ে এতিমখানার স্থাপনা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল সেগুলো মেরামত করেছি। টাকা আত্মসাতের যে অভিযোগ করা হচ্ছে, সেটি ঠিক নয়।
আশাশুনি উপজেলা সামজসেবা কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, এতিমদের খাওয়ানোর জন্য দোকান থেকে বাকি নেওয়া বিল ভাউচার জমা দিয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এরপর বরাদ্দের টাকা চেকের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। তারা ১৬ জন এতিমের বরাদ্দ পায়, তবে সেখানে কোনো এতিম ছাত্র নেই। আগামীতে সেখানে আর কোনো বরাদ্দ দেওয়া হবে না।
সাতক্ষীরা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সন্তোষ কুমার নাথ বলেন, এতিমের একটি টাকাও অপচয় বা নষ্ট করা যাবে না। সরকারি বরাদ্দের টাকা এতিমদের পেছনে ব্যয় করতে হবে। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.