মোস্তফা কামাল শ্রাবন,চুয়াডাঙ্গাঃ
চুয়াডাঙ্গার আকন্দবাড়িয়া গ্রামে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে ঘটনার ২০ দিনের মাথায় স্বামী রহমান গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে তাকে আকন্দবাড়িয়ার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
সে তার স্ত্রী যুথি খাতুনকে (২৫) হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার হয়।
জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দর্শনা থানাধীন বেগমপুর ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়া গ্রামের ঈদগাহ পাড়ার যুথি খাতুন (২০) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থলে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ওইদিনই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে রহস্য। ঘটনা উদঘাটনে তদন্তে মাঠে নামে পুলিশ। ময়না তদন্ত শেষে গ্রামের কবরস্থানে ওইদিন রাতেই দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
স্থানীয় ও পরিবার সুত্রে জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়া ফার্ম পাড়ার তমছেল আলীর মেয়ে যুথি খাতুনের সাথে ৯ বছর পূর্বে পারিবারিক ভাবে শরিয়া মোতাবেক বিয়ে হয় একই গ্রামের ঈদগা পাড়ার দেলবার ফকিরের ছেলে সেলুন ব্যাবসায়ী আব্দুর রহমানের সাথে। তাদের কোল জুড়ে আসে একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান। দাম্পত্য জীবনে বিভিন্ন সময় কলহের সৃস্টি হয়। এরই মধ্যে প্রতিবেশি ইস্রাফিলের মেয়ে প্রিয়ার সাথে রহমান জড়িয়ে পড়ে পরকিয়ায়।
সে পরকিয়া প্রেমিকা প্রিয়ার সাথে প্রায় বছর খানেক পূর্বে দ্বিতীয় বিয়ে করে। দ্বিতীয় বিয়েকে কেন্দ্র করে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে স্বামী আব্দুর রহমানের পারিবারিক কলহের সৃস্টি হয়। এ নিয়ে তাকে প্রতিনিয়ত শারিরিক নির্যাতন করতো স্বামী আব্দুর রহমান। এরই এক পর্যায় নির্যাতন সইতে না পেরে যুথি স্বামী গৃহ ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে যায়।
দির্ঘদিন প্রথম স্ত্রী জুথি পিতার বাড়ি থাকার পর দ্বিতীয় স্ত্রী প্রিয়াকে তালাক দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে ঘটনার ১৫ দিন পূর্বে স্বামী আব্দুর রহমান তার প্রথম স্ত্রী যুথি খাতুনকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে নেওয়ার পর আবার শুরু হয় নিরব নির্যাতন।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৪ মার্চ রাত্রে রহমান তার দ্বিতীয় স্ত্রী পিয়াকে তার বাড়িতে নিয়ে যায় এবং প্রথম স্ত্রী যুথি খাতুনকে বাহিরে রেখে তার প্রথম পক্ষের একমাত্র ছেলে আপনকে (৭) সাথে নিয়ে ঘরের মধ্যে দ্বিতীয় স্ত্রী সহ রাত্রি যাপন করে। তাদের এহেন কর্মকান্ডে এলাকাবাসির মনে সন্দেহ সৃস্টি হয়।
পরদিন সকালে তার ঝুলন্ত লাশ মৃত অবস্থায় দেখতে পাই এলাকাবাসী।
এলাকাবাসি ও স্বজনদের ধারণা রহমান ও তার দ্বিত্বীয় স্ত্রী দু'জন মিলে যুথিকে হত্যার পর তার লাশ ঘরের আড়ায় ঝুলিয়ে রেখেছে। তবে পুলিশের বক্তব্য ফরেনসিক রিপোর্ট আসলেই সব রহস্য বেরিয়ে আসবে। তবে নিহতের স্বজনদের অভিযোগ হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী আত্মগোপনে থাকে।
এ ঘটনায় গ্রামবাসী হত্যাকারী আব্দুর রহমানের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবীতে ফুসে উঠে। এবিষয়ে দর্শনা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। মামলা নং ১৩ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দর্শনা থানা পুলিশ।
ঘটনার ২০ দিনের মাথায় গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে স্ত্রী হত্যার অভিযুক্ত ঘাতক রহমানকে গ্রেফতার করেছে দর্শনা থানা পুলিশ।
দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ এ,এইচ,এম লুৎফুল কবীর বলেন,আত্মহত্যাপ্রচনার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আত্মহত্যা প্রচনায় ৩০৬ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তবে ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে আসলে বুঝা যাবে মৃত্যুর মূল রহস্য।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2025 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.