শাহরিয়ার শাকিল, বড়লেখা (মৌলভীবাজার)প্রতিনিধি
হারিয়ে যাচ্ছে আর্য সংস্কৃতিতে আবিষ্কৃত গ্রামবাংলার হাজার বছরের প্রাচীন লোকজ ঐতিহ্য ‘ঘাইল ছিয়া’। কারুশিল্পীরা কাঠ দিয়ে নানান জাতের ঘাইল ও ছিয়া তৈরি করতেন। নক্শাখচিত এ ঘাইল ছিয়ায় থাকে হরেক রকম কারুকাজ।
মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার অনেক মানুষ ঘাইল ছিয়া তৈরির কাজ করতেন। আধুনিকতার ছোঁয়ায় শতবছরের ঐতিহ্যবাহী এ শিল্প হারিয়ে গেলেও পূর্ব-পুরুষদের পেশা হিসেবে অনেকেই ধরে রেখেছেন বলে জানা যায়।
আগে শীতের পিঠাপুলি তৈরির প্রধান উপকরণ চালের গুঁড়ি প্রস্তুত করার জন্য ঘাইল ছিয়াই ছিল একমাত্র ভরসা।
আধুনিক যন্ত্রপাতি আবিষ্কারের ফলে ও কালের বিবর্তনে এ শিল্প হারিয়ে গেলেও গ্রামীণ জনপদে এখনো এর কদর রয়েছে।
সাধারণত: বিশাল গাছের নিচ দিকের গুঁড়ি থেকে এগুলো প্রস্তুত করা হয়। প্রথমে গুঁড়ির ভেতরটা গর্ত করে মসলা বা শস্যাদি রাখার স্থান তৈরি করা হয়। আর একটা লম্বা মসৃণ দণ্ড (ছিয়া) দিয়ে সেই গর্তে রাখা মসলা বা শস্যে জোরে জোরে আঘাত করা হয়। এই আঘাতে মসলা বা শস্যাদি গুঁড়ো হয়। আদিকালে হাতে পেষার জন্য এ ধরনের যন্ত্র ব্যবহৃত হলেও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগায় অনেক স্থানেই এখন আর এর ব্যবহার দেখা যায় না। অঞ্চলভেদে এর নামের ভিন্নতা থাকলেও বড়লেখা অঞ্চলে একত্রে ‘ঘাইল-ছিয়া’ বলা হয়।
নিচের গুঁড়িটাকে ‘ঘাইল’ আর আঘাত করার দণ্ডকে ‘ছিয়া’ বলা হয়। শীতের পিঠা তৈরির ধুম পড়লে ঘাইল ছিয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়। সিলেট বিভাগের গ্রামীণ জনপদ ও শহরে অনুষ্ঠিত লোকজ মেলায় ঘাইল ছিয়া বিক্রি করা হয়। বিভিন্ন মেলায় এগুলো বিক্রি হতে দেখা যায়। বৈশাখী মেলাকে সামনে রেখে ঘাইল ছিয়া তৈরি করা হয় এবং বিভিন্ন মেলাতেই বিক্রি হয়। এর বিভিন্ন সাইজ রয়েছে। ছোট, মাঝারি, বড়। ৪০০থেকে ৮০০ টাকায় পর্যন্ত প্রতিটি ঘাইল বিক্রি হয়।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2025 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.