এ.এইচ কামরুল, বিশেষ প্রতিনিধি:
একসময় যে এলাকায় ছিল শুনশান নীরবতা, রাত হলে আশপাশ দিয়ে যেতে সাহস পাইনি কেউ। এখন সন্ধা হতেই চারদিকে আলোর ঝলকানি। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত তাহাজ উদ্দিনের দোকানে বসে বাস্পায়িত চায়ের চুমুকের সাথে নানান গল্পে ভাঙে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসীন্দাদের নীরবতা। কেউ বলেন জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর কথা, আবার কেউ শোনান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের গল্প। এ নিয়েই মুখরিত হয়ে ওঠে আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকা। ভোরের সূর্য উকি দিতেই পাখির কিচির-মিচিরে ঘুমভাঙা শিশুদের কলোকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। নিজের ঘরে নিশ্চিন্ত মনে ঘুমিয়ে সকালের সূর্য জানালার ফাঁকে উকি দিয়ে গৃহকর্মীর চোখে পড়তেই লাফ দিয়ে উঠে শুরু করে ঘরের কাজ। বছরের পর বছর রেলষ্টেশনে নির্ঘুম রাত কাটানো প্রতিবন্ধী মুন্না এখন নিজের ঘরে আরামে ঘুমিয়ে সকালে বেড়িয়ে পড়ে পেটের তাগিদে। এভাবেই দিন যায়, দিন আসে, আর আগামীর স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে উঠছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর আবাসন প্রকল্পের শিশুরা। তাঁরাই তো আগামীর ভবিষ্যৎ, তাঁরাই গড়বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী উপহারের (নিজের) ঘরে বসে লেখাপড়ায় ব্যাস্ত কোমলমতি শিশুরা।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ২৩টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ভুমিহীন ও গৃহহীন ২৩টি পরিবারকে ওই ঘর উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছে। চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল জমিসহ ওই ঘরগুলো তাঁরে কাছে হস্তান্তর করা হয়। সাথে দেয়া হয় জমির দলিল। এককথায় জমিসহ ওই ঘরের মালিক এখন থেকে তারাই। জমিসহ উপহারের ঘর পাওয়া ওই ২৩টি পরিবার এতোদিন অনিশ্চয়তার মাঝে দিন পার করেছে। আশ্রয়হীন টানাপোড়েনের সংসারে কিভাবে তাদের সন্তানদের মাথাগোজার ঠাই করে দেবে। তাদের মতো তাদের সন্তানরাও কি সারাজীবন অন্যের জমিতে বসবাস করবে? থাকেবে গৃহহীন ? এমনই অনিশ্চয়তার মাঝে তাদের মাঝে দুত হয়ে আসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ঘোষণা দেন, বাংলাদেশের একটি মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। বর্তমানে তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করছে।
উপহারের ঘর পাওয়া তাহাজ উদ্দিন (৭০) বলেন, টিকমতো চলতে পারিনা। রেলবস্তিতে বসবাস করতাম। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘর পেয়ে খুশি। স্ত্রী নছিমন বেগমকে নিয়ে বর্তমানে তিনি মোমিনপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামে আশ্রয়নের ৬ নং ঘরে বসবাস করছেন। ঠিকমতো চলাফেরা করতে না পারায় আয় রোজগার তেমন নেই। সে কারণে ঘরের সামনে একটি চায়ের দোকান দিয়েছেন। সেখান থেকে প্রতিদিন ১৫০ টাকা থেকে ২শ’ টাকা আয় হয়। তার দুই ছেলে সেলিম ও শামীম তারাও সেখানে একটি করে ঘর পেয়েছে।
প্রতিবন্ধী মুন্না (৫৫) আশ্রয়স্থল ছিল চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে ষ্টেশন। প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের ঘরে ভালোই আছেন তিনি। মুন্না তার পরিবারকে নিয়ে আশ্রয়ন প্রকল্পের ১৪ নং ঘরে বসবাস করছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভুইয়া বলেন, মুজিববর্ষে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মধ্যে জমিসহ ঘর তুলে দেয়ার এ প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। গৃহহীন ও ভূমিহীনদের ঘর দিয়ে স্থায়ী ঠিকানা করে দিচ্ছেন। যা পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও এমন নজির নেই।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি-খন্দকার গোলাম মওলা নকশেবন্দী। সম্পাদক/প্রকাশক-রবিউল ইসলাম। ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক-সাবিহা প্রমানিক। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ ধানমন্ডি শংকর ঢাকা-১২০৯, মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪, ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩, ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com ।