মোঃ সাজ উদ্দিন সাজু, সিলেট প্রতিনিধি:
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নয়াগাং ও সবুড়ী নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে নদী গর্ভে বিলীন চলাচলে রাস্তা, বাড়িঘর সহ ফসলি জমি। নদী ভাঙ্গনে বাউরভাগ মল্লিফৌদ, কাটাখাল ও লামনীগ্রামের গ্রামীণ রাস্তাসহ শতাধিক বাড়ি সহ কয়েক হাজার একর ফসলি জমি হুমকির মুখে রয়েছে। নদীর সর্বগ্রাসী ভাঙ্গনে কাটাখাল রাস্তার দেড় কিলোমিটার নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।
সরেজমিনে নদী ভাঙ্গলের খোঁজ নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, নদীর তীরবর্তী মোয়াখাই, লামনীগ্রাম, কাটাখাল মল্লিফৌদ গ্রামগুলো রক্ষা করতে জরুরী ভাবে বাঁধ স্থাপন করা। নতুবা পুনরায় বন্যা দেখা দিলে এসব এলাকার মানুষ সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতির স্বীকার হবে এবং ফসলী জমি চলে যাবে নদী গর্ভে। ইতোমধ্যে কাটাখাল গ্রামের প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নদীর উভয় অংশে অন্তত ২হাজার মানুষের বসতবাড়ি ও তাদের ধানের ফসলি জমি রয়েছে। নদী ভাঙ্গনের স্বীকার হয়ে বসত ভিটা ছেড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে অন্য স্থানে চলে যাচ্ছে অনেকেই। নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে গ্রামের মানুষকে রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থায়ী ভাবে নদী তীরবর্তী বাঁধ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণের দাবী জানান।
এলাকাবাসী জানান, ওয়াপদা বেড়ী বাঁধের কারনে নয়াগাং নদীর পানি স্বাভাবিক গতির চেয়ে বেশি গতিতে প্রবাহ হচ্ছে। ফলে নদীর প্রবল স্রোত এবং দীর্ঘ সময়ে নদীতে পানি থাকায় নদী তীরবর্তী মানুষের বসত ভিটা, চলাচলের রাস্তাঘাট ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। এলাকার বাসিন্দা আলহাজ্ব ফরিদ উদ্দিন আহমদ বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি জৈন্তাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা হওয়ায় জনগণের প্রত্যাশা তিনি শিগগির নদী ভাঙ্গনের কবল হতে মানুষের বসতবাড়ি, ফসলি জমি চলাচলের রাস্তা রক্ষায় এগিয়ে আসবেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ জাকারিয়া, হাবিবুর রহমান সাবেক ইউপি সদস্য ইসমাইল আলী, আলী আকবর, আব্দুস শুক্কুর উরফে নেতা শুক্কুর, ফখরুল ইসলাম, গাড়ী চালক বিলাল আহমদ বলেন, নয়াগাং ও সবুড়ী নদীর ভাঙ্গনে কাটাখাল গ্রামের প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা নদীতে চলে গেছে। এছাড়া বসতবাড়ী, ফসলী জমি ভাঙ্গনের স্বীকার হয়েছে। পুরো বর্ষা মৌসুম শেষ হতে অনেক বাকী। যে হারে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে তাতে বর্ষা মৌসুম শেষ হতে আরও অনকে অংশ রাস্তা নদীর পেটে চলে যাবে। নদী ভাঙ্গন রোধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও মন্ত্রী মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করি।
জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন, মোয়াখাই, লামনীগ্রাম, বাউরভাগ কাটাখাল গ্রামীণ রাস্তার মাটি ভরাটসহ সংস্কার কাজ করা প্রয়োজন। এছাড়া নদী ভাঙ্গনের স্বীকার প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে সংস্কার করা সম্ভব নয়। এজন্য উপজেলা, জেলা ও মন্ত্রী মহোদয়ের সহায়তা জরুরী প্রয়োজন। কিন্তু নয়াগাং ও সবুড়ী নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে রাস্তা রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। নদীর ভাঙ্গন হতে এই জনপদ রক্ষায় প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। নদীভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে নদীর তীরবর্তী গ্রাম গুলোর বাসিন্দারা নিজের বসত ভিটা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হবে। তিনি বলেন আরও বলেন, নদীর উভয় অংশে বাঁধ স্থাপন করা হলে অব্যাহত নদী ভাঙ্গন হতে রাস্তা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বসত ভিটা রক্ষা পাবে।
জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, পানি নামার পর পর বিভিন্ন অঞ্চলের গ্রামীণ রাস্তা মেরামত ও সংস্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া নদী ভাঙ্গনের ফলে বাউরভাগ কান্দি, মল্লিফৌদ, কাটাখাল, মোয়াখাই ও লামনীগ্রামের বাসিন্দাদের রক্ষা করা অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি মন্ত্রী মহোদয় সহ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত অনুরোধ জানাবেন।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2025 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.