আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস
দখল-দূষণে যশোর ভৈরবে বারোটা
ভৈরব নদ ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। নদের পানি কালচে বর্ণ ধারণ করেছে। পানি দুর্গন্ধযুক্ত।
মোঃউজ্জাল হোসেন ব্যুরো প্রধান যশোর
যশোর শহরের প্রাণকেন্দ্র দড়াটানা মোড়। এখানে ভৈরব নদের ওপর দড়াটানা সেতু। সেতুর দুই পাশের নদের জমি দখল করে বসেছে মৌসুমি ফলের অন্তত ৩০টি দোকান। এসব দোকানের উচ্ছিষ্ট অংশ ঝুড়ি ভরে সেতুর ওপর থেকে নদে ফেলা হয়।
শুধু ফলের দোকানের ময়লা-আবর্জনা নয়, সেতুর দুই পাশের প্লাবনভূমি দখল করে অন্তত ৫০টি বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক গড়ে তোলা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মেডিকেলবর্জ্য ও তীরের অধিকাংশ ভবনের শৌচাগারের মানববর্জ্য সরাসরি পাইপলাইনের মাধ্যমে ভৈরব নদের গভীরে ফেলা হচ্ছে। নদটি যেন শহরের ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। নদের পানি কালচে বর্ণ ধারণ করেছে। পানি দুর্গন্ধযুক্ত। দখল-দূষণে নদে মাছসহ অন্যান্য প্রাণের অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। তবে নদটি বাঁচাতে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও যশোর পৌরসভা কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই।
এ পরিস্থিতিতে আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে কর্মসূচির আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর। জেলা প্রশাসনের সভাকক্ষে পরিবেশ দিবসের আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরিবেশ রক্ষায় দৃশ্যমান কোনো কর্মসূচি রাখা হয়নি।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক সাঈদ আনোয়ার আলোচিত কন্ঠকে বলেন, ‘ভৈরব নদের পানিদূষণকারীদের তালিকা পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’ তালিকা কে দেবে বা তালিকা না পেলে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো দায়-দায়িত্ব নেই? এমন প্রশ্নের জবাবে সাঈদ আনোয়ার বলেন, ‘আমাদের লোকবলের সংকট রয়েছে। তা ছাড়া অভিযান পরিচালনার জন্য নির্বাহী ক্ষমতা আমাদের নেই। কোনো ব্যক্তির ভবনের শৌচাগারের বর্জ্য পাইপলাইন দিয়ে নদের ভেতরে ফেলা হলে সেটা দেখার দায়িত্ব সরাসরি পৌরসভা কর্তৃপক্ষের।
শুধু ফলের দোকানের ময়লা-আবর্জনা নয়, সেতুর দুই পাশের প্লাবনভূমি দখল করে অন্তত ৫০টি বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক গড়ে তোলা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মেডিকেলবর্জ্য ও তীরের অধিকাংশ ভবনের শৌচাগারের মানববর্জ্য সরাসরি পাইপলাইনের মাধ্যমে ভৈরব নদের গভীরে ফেলা হচ্ছে। নদটি যেন শহরের ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। নদের পানি কালচে বর্ণ ধারণ করেছে। পানি দুর্গন্ধযুক্ত। দখল-দূষণে নদে মাছসহ অন্যান্য প্রাণের অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। তবে নদটি বাঁচাতে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও যশোর পৌরসভা কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই।
এ পরিস্থিতিতে আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে কর্মসূচির আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর। জেলা প্রশাসনের সভাকক্ষে পরিবেশ দিবসের আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরিবেশ রক্ষায় দৃশ্যমান কোনো কর্মসূচি রাখা হয়নি
গত শুক্রবার শহরের ভৈবর নদের পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, দড়াটানা সেতুর দক্ষিণ ও উত্তর পাশের নদের জায়গা দখল করে বসেছে অন্তত ৩০টি ফলের দোকান। সেখানে দোকানের ময়লা-আবর্জনা ঝুড়ি ভরে সেতুর ওপর থেকে নদে ফেলতে দেখা যায়। দড়াটানা সেতু থেকে পৌনে এক কিলোমিটার দূরত্বে কাঠেরপোল সেতু এলাকায়ও একই দৃশ্য দেখা যায়। সেখানে সেতুর দুই পাশে অন্তত ৩০টি মাংস বিক্রির দোকান রয়েছে। ওইসব দোকানের গরুর রক্ত, নাড়ি-ভুঁড়ি ও হাড় সেতুর ওপর থেকে নদে ফেলা হচ্ছে।
কেন নদের ভেতরে ময়লা ফেললেন—এমন প্রশ্নে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘সেতু এলাকায় পৌর কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা রাখেনি। যে কারণে বাধ্য হয়েই আমরা নদের ভেতরে ময়লা ফেলছি। ময়লা ফেলার জন্য আশপাশে খালি জায়গাও নেই।’
এ বিষয়ে যশোর পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলর মুকসিমুল বারী বলেন, ‘দড়াটানা ও কাঠেরপোল সেতুর পাশে ময়লা রাখার কনটেইনার স্থাপনের জায়গা নেই। নদের জায়গা দখল করে ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে দোকান দিয়েছেন। ওই দোকান উচ্ছেদ করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কনটেইনার বসানো যেতে পারে। এ বিষয়ে পৌরসভায় আলোচনা করব।’
উচ্ছেদ না করেই শেষ হচ্ছে খনন প্রকল্প
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত অনুযায়ী ২০১৬ সালে ২৭২ কোটি টাকার ৯২ কিলোমিটার নদ খনন প্রকল্প গ্রহণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমিতে গড়ে তোলা ২৯৬টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ ৮৪টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও দেড় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা এখনো অক্ষত আছে।
এদিকে নদ খননে দুই দফার বর্ধিত মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২২ জুন। খনন কাজও শেষ প্রান্তে। তবে দুই ধারের হাঁটার পথ ও সৌন্দর্যবর্ধন করার জন্য প্রকল্পের মেয়াদ আরেক দফা বাড়ানো হতে পারে। তবে দখলদার উচ্ছেদ করা হয়নি।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.