পদ্মা সেতু আজ আর স্বপ্ন নয়, এটি বাস্তবতা। এ যেন এক স্বপ্নের বাস্তবায়ন। দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল এই পদ্মা সেতু। আগামী ২৫ জুন উদ্বোধনের মাধ্যমে মানুষের যাতায়াতের নতুন দিগন্ত উন্মেচিত হবে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে। এরই মধ্যে সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ এবং সরকার। উদ্বোধন উপলক্ষে সেতুও সাজছে বর্ণিল সাজে। এ যেন বাঙালির স্বপ্ন পূরণের এক মাহেন্দ্রক্ষণ।
পদ্মা সেতুকে ঘিরে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। অনেকেই বলছেন পদ্মা সেতু বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির সোপান। বাঙালির অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে এই পদ্মা সেতু। তবে এটা নিশ্চিত করে বলা যেতে পারে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর বদলে যাবে পুরো বাংলাদেশের চিত্র। উন্মোচিত হবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের অর্থনৈতিক-সামাজিক মুক্তির দ্বার।
সেই সঙ্গে পাল্টে যাবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের চিত্র। ভোগান্তির অপর যে নাম ছিল দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট। সেই নৌরুট এখন স্বস্তির অপর নাম হবে। পদ্মা সেতু চালু হলে চিরায়ত রুপ পাল্টে যাবে এই নৌরুটটির। পাশাপাশি কমবে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আর অপেক্ষা করতে হবে না দক্ষিণবঙ্গের মানুষের।
স্বাভাবিক সময়ে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন নদী পারাপার হয়। তবে বিশেষ সময়গুলোতে যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। যার কারণে নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও চালকরা। দিনের পর দিন নদী পারের অপেক্ষায় পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে অপেক্ষা করতে হয় খোলা আকাশের নিচে। মানবেতর জীবন-যাপন করেন চালক ও চালকের সহকারীরা।
অন্যদিকে নদী পাড়ি দেওয়ার জন্য দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহনগুলোকেও ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে অপেক্ষায় থাকতে হয় ফেরির। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পরিবহনের মধ্যে থেকে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন যাত্রীরা। বিশেষ করে নারী, শিশু ও বয়স্কদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে।
কিন্তু আশার কথা হলো পদ্মা সেতু চালু হয়ে গেলে এই নৌরুটে চাপ কমবে যানবাহনের এমনটাই প্রত্যাশা করছে যাত্রী ও চালকরা। সেক্ষেত্রে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যে ভোগান্তি পোহাতে হতো সেটার অবসান ঘটবে।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট নিয়মিত ব্যবহার করা চালক সোহানুর রহমান জানান, পদ্মা সেতু হয়ে গেলে তখন অধিকাংশ যানবাহন সময় বাঁচানোর জন্য পদ্মা সেতু ব্যবহার করবে। তখন রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে চাপ কমে যাবে। যারা দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট নিয়মিত ব্যবহার করে তাদের জন্য ভোগান্তি কমে যাবে। তখন ঘাট পাট হতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহার করা একাধিক চালক ও যাত্রীরা বলেন, ভোগান্তির অপর নাম ছিল দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট। এই নৌরুটে সব সময় যানজট ও গাড়ির দীর্ঘ সারি সব সময় লেগেই থাকত। এখন আশা করছি সেই ভোগান্তি আর আমাদের পোহাতে হবে না। পদ্মা সেতু চালু হয়ে গেলে এই নৌরুটে অনেক যানবাহনের চাপ কমে যাবে। ফলে খুব দ্রুতই আমরা নদী পার হতে পারব।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শিহাব উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের চাপ কমে যাবে। তখন যানবাহনগুলোকে আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।
পদ্মা সেতু চালু হলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ রুটের চাপ কমে গেলে তখন এই রুটে কী পরিমাণ ফেরি চলাচল করবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তখন কী পরিমান ফেরি চলাচল করবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে সেতু চালু হবার সপ্তাহখানেক বাদে বোঝা যাবে কী অবস্থা। এই ঘাটের যানবাহনের চাপ না থাকলে তখন অলস ফেরিগুলোকে অন্যরুটে নিয়ে যাওয়া হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.