স্বপন কুমার রায় খুলনা ব্যুরো প্রধানঃ বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের চরম সংকট। দেশীয় উৎস থেকে গ্যাস অনুসন্ধানে অবহেলা আর আমদানি নির্ভর পরিকল্পনাই বর্তমান সঙ্কটের প্রধান কারণ।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের হিসাবে, বর্তমানে ২২ হাজার ৩৪৮ মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতার ৫১ শতাংশই গ্যাস নির্ভর। চাহিদা অনুযায়ী দৈনিক ২২৫ কোটি ঘনফুট সরবরাহ থাকলে উৎপাদনও হতো সে অনুযায়ী। কিন্তু ৫ জুলাই গ্যাস পুড়িয়ে বিদ্যুৎ পাওয়া যায় মাত্র ৫ হাজার ৩৮৭ মেগাওয়াট। যা সক্ষমতার ৪৭ শতাংশ। কারণ পেট্রোবাংলা কেন্দ্রগুলোতে গ্যাস দিতে পেরেছে মাত্র ৮৮ কোটি ঘনফুট। অন্যদিকে আমদানিও ছিল সক্ষমতার অর্ধেক। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই গ্যাস সঙ্কটের পেছনে কি দায় রয়েছে ভুল পরিকল্পনার?
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরূল ইমাম জানান, আজকে যে সংকট, সেটা আমাদের ভুল নীতির কারণে। আমরা যতি নিজস্ব গ্যাস উত্তলন করে আমরা চলতাম তাহলে আমরা আরও দশ বছর গ্যাস দিয়ে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং অন্যান্য কাজ করতে পারতাম। এলএনজি আমদানি করেতো আমাদের দেশ কুলাতে পারবে না। নিজস্ব গ্যাস যখন শেষ হয়ে যেত তখন এলএনজি আমদানির কথা ভাবা যেত।
তথ্য উপাত্ত বলছে, গত ২০ বছরে নতুন গ্যাসকূপ খনন করা হয়েছে মাত্র ২৮টি। অথচ খননের বিপরীতে সাফল্যের হার বৈশ্বিক গড় হারের চেয়ে বেশি বাংলাদেশে। অন্যদিকে বছর পাঁচেক আগে, একশটি কূপ খননের পরিকল্পনা নেয়া হলেও সেখান থেকে পুরোদমে সরে আসে সরকার। নানা কারণে এগোয়নি সমুদ্রের অনুসন্ধানও। ফলে দেশীয় উৎস থেকে সরে এসে নজর বিস্তৃত হয় আমদানির দিকে। যা এই মুহূর্তে হয়ে উঠেছে সবচেয়ে বড় মাথা ব্যথার কারণ। যদিও, বৈশ্বিক বিভিন্ন গবেষণা বলছে, বাংলাদেশে এখনো মজুদ রয়েছে ৩৩ থেকে ৪২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের। যাকে সঠিক পরিকল্পনার আওতায় আনা গেলে নিশ্চিন্ত থাকা যেতো অন্তত দশ বছর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনুসন্ধানে নজর দেয়া গেলে আরও অন্তত দশ বছর নিশ্চিন্ত থাকা যেতো প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম জানান, আমরা কয়লা আমদানি করে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করবো কিন্তু আমাদের যে নিজস্ব কয়লা আছে সেটা উৎপাদন করবো না। তাতে আমদানি নির্ভরশীলতা আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়ে গেছে।
বর্তমান বাস্তবতায় আগামী তিন বছরে ৬১ কোটি ঘনফুট গ্যাস যোগ করার লক্ষ্যে নতুন এক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে পেট্রোবাংলা। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতার বিচারে তাতেও আস্থা রাখতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি-খন্দকার গোলাম মওলা নকশেবন্দী। সম্পাদক/প্রকাশক-রবিউল ইসলাম। ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক-সাবিহা প্রমানিক। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ ধানমন্ডি শংকর ঢাকা-১২০৯, মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪, ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩, ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com ।