মোঃ সাজ উদ্দিন সাজু, সিলেট প্রতিনিধিঃসিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের পশ্চিম লক্ষিপ্রসাদ (কান্দিগ্রাম) এর সৌদি আরব প্রবাসী মন্তাজ আলী ওরফে ময়না মিয়ার ছেলে উসমান গনি নিশাত (১৭) হত্যাকান্ডের রায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রায় প্রকাশ হবে।
সরেজমিনে সৌদি আরব প্রবাসী মন্তাজ আলী ওরফে ময়না মিয়ার সাথে কথা বলে তিনি জানান, ২০১৫ সালের ৩০ জুন মঙ্গলবার বাড়ি হতে পাশ্ববর্তী কানাইঘাট উপজেলার চতুল বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে গিয়ে বাড়ি ফিরেনি। সম্ভাব্য সকল স্থানে খুঁজেও উসমান গনি নিশাত (১৭) এর কেনো হদিস পাওয়া যায়নি। ২০১৫ সালের ০২ জুলাই বৃহস্পতিবার কানাইঘাট উপজেলার দূর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পার্শ্বে সুতারি খালে লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয় জনতা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে তৎকালীন কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল ও উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) কামাল দুপুর সাড়ে ১২ টায় লাশ উদ্ধার করে অধিকতর তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এদিকে নিহতের পিতা মন্তাজ আলী ওরফে ময়না মিয়া ০১ জুলাই জৈন্তাপুর মডেল থানায় অপহরণ পূর্বক ছেলেকে গুম করা হয়েছে মর্মে অবহিত করলে পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে ০৪ জনকে আটক করে। আটককৃতরা হলো জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের চাক্তা গ্রামের সুলেমান আহমদের ছেলে রেজওয়ান আহমদ (১৯), লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম গ্রামের মৃত মন্তাজ উদ্দিনের ছেলে ফখরুজ্জামান (২৯), হারাতৈল গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে হাফিজ নাজমুল ইসলাম ফয়ছল (২১), লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম গ্রামের মৃত বকুল মালাকারের ছেলে মকুল মালাকার (২১)। আটকের পর তৎকালীল জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাক চন্দ্র বসাক এর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানায় নিখোঁজ কিশোর নিশাত সহ আটককৃতরা কানাইঘাটের চতুল বাজারে ঘটনার দিন দিবাগত রাত ১২:০০ ঘটিকা পর্যন্ত এক সাথে ফেনসিডিল ও স্থানীয়ভাবে তৈরী ঝাঁকানাকা সেবন করেছিল। এছাড়া তথ্যগত বিভিন্ন ধরনের গরমিল পাওয়ায় পুলিশ তাদেরকে আটক করে কানাইঘাট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
অপরদিকে কানাইঘাট থানার মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মোঃ জসিম উদ্দিন জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশের সহায়তায় জৈন্তাপুর উপজলার লালাখাল দূর্গম পাহাড়ী এলাকা হতে হত্যাকান্ডের ঘটনায় সরাসরি জড়িত কানাইঘাট উপজেলার বড়চতুল ইউপির দূর্গাপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে ফখরুল ইসলাম বকুল (৪০) কে আটক করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডের ঘটনায় সরাসরি জড়িত অপর আসামি দূর্গাপুর গ্রামের এবাদুর রহমান ওরফে এবাইর ছেলে দুলাল আহমদ (৪২) কে আটক করা হয়। দীর্ঘ ০৭ বৎসর শুনানির পর মামলার স্বাক্ষী প্রমাণ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর আগামীকাল ০৮ আগষ্ট আলোচিত ও পৈশাচিক কায়দায় দূর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র উসমান গনি নিশাত (১৭) হত্যাকান্ডের রায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রায় প্রকাশ হবে।
নিহতের পিতা মন্তাজ আলী ওরফে ময়না মিয়া জানান, দীর্ঘদিন পর মাননীয় আদালত রায় প্রকাশ করবেন। আমি আশাবাদী ও দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আদালত কর্তৃক আমার ছেলে হত্যার ন্যায় বিচার পাইয়ে দিবেন।