সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রামঃপাষণ্ড স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজনের নিক্ষিপ্ত গরম তেলে ঝলসে গেছে গৃহবধু লাবনী খাতুন (২২)এর শরীর। আহত গৃহবধূকে পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে ।
নির্মম এ ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পৌর এলাকা জোনাইডাঙ্গা গ্রামে। ওই গৃহবধূর অভিযুক্ত স্বামী সুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । গৃহবধূর ওপর নির্যাতনের ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এস.আই মশিউর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের কিশোরপুর গ্রামের বাবলু মিয়ার কন্যা লাবনী খাতুনের সাথে প্রায় ১০ বছর আগে উলিপুর পৌরসভার জোনাইডাঙ্গা গ্রামের মনসুর আলীর পুত্র সুজনের বিয়ে হয়।
বিয়ের পর লাবনীর কোল জুড়ে একটি পুত্র সন্তান আসে। যার বয়স এখন ছয় সাত বছর। লাবনীর পারিবারিক সূত্র জানায়, বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন লাবনীকে নানা অজুহাতে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করে আসছিল। লাবনীর মা রাশেদা বেগম সাংবাদিকদের জানান, শারীরিক নির্যাতনের পরও লাবনী তার এক মাত্র সন্তানের কথা ভেবে মাটি কামড়ে ধরে শশুর বাড়িতে ছিল।
গত বুধবার সকালে বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে তুচ্ছ ঘটনার জেরে ক্ষিপ্ত স্বামী ও শাশুড়ি মিলে গরম তেল নিক্ষেপ করে লাবলীর শরীর ঝলসে দিয়েছে। শুধু তাই নয় যাতে সে কাউকে খবর দিতে না পারে এবং চিকিৎসা না হয় সেজন্য তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
এ অবস্থায় চরম নিষ্ঠুরতার এ ঘটনা গত তিন দিনেও বাবার বাড়ির লোকদের জানাতে পারেনি লাবনী।
শুক্রবার নির্যাতনের শিকার লাবনী অত্যন্ত কৌশলে মোবাইলে তার উপর অত্যাচারে খবর খালাকে জানালে, খালা তাৎক্ষণিক ওই বাড়িতে এসে ঘটনা প্রত্যক্ষ করে এবং বিষয়টি উলিপুর থানাকে অবহিত করে । এরপর উলিপুর থানার এস.আই তাজুউদ্দীন দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে লাবনীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায় এবং অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় লাবনীর মা রাশেদা বেগম আজ নিজে বাদী হয়ে লাবনীর স্বামী, শশুর ও শাশুড়ীর বিরুদ্ধে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন । উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের কথা নিশ্চিত করেন।