লিটন পাঠান,হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ পাহাড়, টিলি, হাওর, বন, নদী, এই নিয়ে এখন বাংলাদেশের পর্যটন। হবিগঞ্জের মাধবপুর আছে এর সবকিছুই এগারোটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত মাধবপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন হাওর বেষ্টিত ও চারটি ইউনিয়নে আছে পাহাড়, বন ও চা বাগান আর পুরো উপজেলা জুড়েই আছে অসংখ্য পাহাড়ি নদী ও খাল।যে কেউ মাধবপুর উপজেলায় বেড়াতে আসলে সারা বাংলাদেশের সৌন্দর্য সম্পর্কে একটা ভালো ধারণা পেয়ে যাবে।হাওর বেষ্টিত বুল্লা ও ছাতিয়াইন ইউনিয়ন এবং আংশিক হাওর বেষ্টিত বাঘাসুরা, আন্দিউড়া ও আদাঐর ইউনিয়নের বর্ষাকালে হাওরের রূপ একবার দেখলে বারবার যেতে ইচ্ছে করবে।
মাধবপুরে পাহাড়, বন,হাওর, নদী, সবই আছে নেই শুধু পর্যটন কেন্দ্র পাহাড় বেষ্টিত উপজেলার শাহজাহানপুর, জগদীশপুর, নয়াপাড়া ও বাঘাসুরা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে পাহাড়, চায়ের বাগান ও সংরক্ষিত বনাঞ্চল।এখানে পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে সৌন্দর্য। পাহাড়ের কূল ঘেঁষে বয়ে গেছে শান্ত পাহাড়ি ছড়া (নদী) সারাবছর এ-সব নদীতে টলটলে পরিস্কার অল্প পানি প্রবাহিত হয় কিন্তু পাহাড়ে বৃষ্টি হলেই এই ছড়াগুলি ধারণ করে ভয়ংকর রুপ। এখানে আছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সুরমা চা বাগান মাধবপুরে পাহাড় বন, হাওর, নদী, সবই আছে নেই শুধু পর্যটন কেন্দ্র, যেটির আয়তন প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার একর।
এছাড়াও তেলিয়াপাড়া, নয়াপাড়া, জগদীশপুর ও বৈকুন্ঠপুর নামে আরও চারটি চা বাগান আছে। চা বাগানের বাঁকে বাঁকে ছড়িয়ে থাকা সৌন্দর্য মুগ্ধ করে ঘুরতে আসা পর্যটকদের বিশাল পাহাড়ি এলাকাজুড়ে আছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল তেলমাছড়া বন বিট আছে একটি রাবার বাগান। মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার খ্যাত মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সদরদপ্তর ছিল এখানকার তেলিয়াপাড়া চা বাগানে। দুই তিন ও চার নাম্বার সেক্টরের শহীদ মুক্তিযুদ্ধাদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধ আছে তেলিয়াপাড়া চা বাগানের বড়ো বাংলোর পাশে চা বাগান বেষ্টিত এই স্মৃতিসৌধের পাশেই আছে একটি লেক।
লেকে ফুটে থাকা লাল শাপলা এখানকার সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ ১৯৭১ সালের ৪ঠা এপ্রিল এখান থেকেই শুরু হয় সুসংগঠিত মুক্তিযুদ্ধ। তাই সৌন্দর্য পিপাসুরা এখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি জানতে পারেন বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাস। পাহাড় থেকে নেমে আসা সোনাই নদীতে নির্মিত চৌমুহনী ও বহরা রাবার ড্যাম কৃষকের মুখে হাসি ফুটানোর পাশাপাশি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। উপজেলার বাঘাসুরা ইউনিয়নের শাহজিবাজার রাবার বাগান ও ফ্রুটস ভ্যালির সৌন্দর্য উপভোগ করতে অনায়াসে একদিন কাটিয়ে দিতে পারেন পর্যটকরা।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সৈয়দ রুকন উদ্দিন বলেন, এখানে এসে চা বাগান, মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার খ্যাত তেলিয়াপাড়া চা বাগানের বড়ো বাংলা স্মৃতি সৌধ ও লেক দেখেছি। আশপাশে পর্যটকদের থাকা খাওয়ার ভাল ও নিরাপদ ব্যবস্থা থাকলে কালকে রাবার বাগান ও ফ্রুটস ভ্যালি এবং পরশু রাবার ড্যাম দেখে ঢাকায় ফিরতাম চা বাগানে ঘুরতে এসে তেলিয়াপাড়া গ্রামের শিক্ষক নয়ন চৌধুরী বলেন পার্শ্ববর্তী।
চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ী জাতীয় উদ্যানে প্রতিদিন শতশত পর্যটক আসে কিন্তু পাশের মাধবপুর উপজেলার তেলমাছড়া বন বিট এরচেয়ে অনেক বড় ও গভীর বন হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র প্রচারণা ও পর্যাপ্ত সুযোগসুবিধা না থাকায় পর্যটক আসে না যদি সরকার মাধবপুরের পর্যটন এলাকা গুলো সম্পর্কে প্রচার প্রচারণা চালায় এবং পরিকল্পিত ভাবে পর্যটকদের নিরাপদ থাকার ব্যবস্থা করে তাহলে হাজার হাজার পর্যটক এখানে আসবে এতে এই এলাকায় পর্যটন নির্ভর অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.