মাসুদ রানা,জেলা প্রতিনিধি গাজীপুরঃ গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন (৪ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ সম্মেলন ঘিরে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে কাশিমপুর আওয়ামী লীগের রাজনীতি। কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে পদপ্রত্যাশীরা নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাংগঠনিক যোগাযোগ যেমন বাড়িয়েছেন, তেমনি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে হয়ে উঠেছেন সক্রিয়। পদপ্রত্যাশীদের পোস্টার-ব্যানারে নগরে সড়কের মোড়গুলো রঙিন হয়ে উঠেছে। সম্মেলন ঘিরে নেতায় নেতায় নানা মেরুকরণও শুরু হয়েছে। কার সঙ্গে কে থাকবেন, কে প্রার্থী হলে কারা সমর্থন পাবে-হিসাব-নিকাশ চলছে। তবে শীর্ষ দুই পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়েই সমীকরণটা জটিল। বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে ছোটাছুটি করছেন ডজন খানেক নেতা।
শক্তিশালী দুই সভাপতি পদপ্রার্থী মোঃ আনোয়ার হোসেন ও মীর আসাদুজ্জামান তুলার মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে যখন নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত, ঠিক তখনই আসাদুজ্জামান তুলার ছন্দপতন। প্রভাবশালী সভাপতি পদপ্রার্থী তুলা তার সভাপতি প্রার্থী থেকে সরে এসে সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াই করার ঘোষনা দিয়েছেন।
হঠাৎ তার সভাপতি পদপ্রার্থী থেকে সরে আসায় তার প্রতিদ্বন্দ্বী আনোয়ার হোসেনের সভাপতি পদ প্রায় নিশ্চিত। এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেড়ে গেল সাধারণ সম্পাদক পদে। এ পদের প্রার্থীরা শংকিত।
আসাদুজ্জামান তুলা বলেন আমি আগেও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলাম এখনো আছি কিন্তু কিছু কুচক্র মহল আমাকে নিয়ে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
সভাপতি পদপ্রার্থী অধ্যাপক আশরাফুল আলম আসকর এক সংবাদসম্মেলনে দাবী করেন, এ সম্মেলনে আমি সভাপতি পদপ্রার্থী হলেও আমাকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করা সুযোগ দেয়া হচ্ছে না বলে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এজন্য আমি শংকিত। আমার এক প্রতিদ্বন্দী লেবাস ধারী দরবেশ, যুবলীগ নেতা আতিক হত্যা মামলার আসামী একনায়কতন্ত্র কায়েমের লক্ষে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখা চেষ্টা করছে বলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করেন।
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী কামাল হোসেন বলেন, তুলা,হঠাৎ সভাপতি পদপ্রার্থী থেকে সরে আসায় আমরা দ্বিধান্বিত, শুধুমাত্র ৬নং ওয়ার্ডে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য তাদের গোপন ষড়যন্ত্র বলে আমার মনে হয়, দিনে আওয়ামী লীগ রাতে বিএনপি এমন কোন নেতা আমরা চাইনা।
হঠাৎ সম্মেলনের দুই দিন আগে তার সরে আসায় সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ও ভোটাররা দ্বিধাদ্বন্দে পড়ে গেছেন।
এদিকে ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ ফকির বলেন, ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হলে জনগনের প্রত্যাশা পূরণ হবে। সিলেকশনের মাধ্যমে যদি নেতা নির্বাচন করা হয় তাহলে দলে বিভক্তি দেখা দিতে পারে, যার প্রভাব পড়বে সিটি কর্পোরেশন ও জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রেও।
আর সিলেকশনই যদি নেতা নির্বাচিত হয় তাহলে এভাবে ভোটার লিস্টের প্রয়োজন কি ছিল, আর এত টাকা খরচ করে আয়োজনের প্রয়োজন কি।
দেড় শতাধিক ভোটারের মধ্যে অধিকাংশ ভোটার ও প্রার্থীদের দাবী সিলেকশন নয়, ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করা হোক। সিলেকশনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করা হলে কর্মীদের মূল্যায়ন তার কাছে থাকে না। আমরা চাই ইলেকশনের মাধ্যমে নির্বাচন হোক।
চায়ের দোকান, ক্লাব,অফিস পাড়া, দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে সবার মধ্যে চলছে টানটান উত্তেজনা।
সংগঠনের বিভিন্ন নেতারা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন ফেসবুকে। সব মিলিয়ে এক উৎসব মূখর পরিবেশ বিরাজ করছে এ থানায়। সম্মেলনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই নেতাকর্মীদের মধ্যে কৌতুহল উদ্দীপনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সাধারণ নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা ত্যাগী এবং জনসমর্থন আছে এমন নেতাদের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করলে সংগঠন শক্তিশালী হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে কমিটির প্রতি যেন বিশেষ দৃষ্টি রাখা হয় সেই আশাবাদ সবার।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.