লিপন খান,কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ অর্গানাইজেশন অব এনভাইরনমেন্টাল পলূশন প্রিভেনশন প্রোগ্রাম (ওয়েপ) এর উদ্যোগে এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সহযোগিতায় ৯ অক্টোবর সকাল ১১টায় কিশোরগঞ্জে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বরে জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে তামাক কোম্পানি থেকে সরকারের শেয়ার প্রত্যাহার করা হোক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ওয়েপ এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান
রিপনের নেতৃত্বে এক অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। দৈনিক আলোচিত কন্ঠের কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি মোঃ আসাদুজ্জামান খান লিপনের সঞ্চালনায় এতে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ মাছুমা আক্তার, কালের নতুন সংবাদ ডট কমের সম্পাদক খায়র“ল ইসলাম, দৈনিক শতাব্দীর কন্ঠের বার্তা সম্পাদক এম এ আকবর খন্দকার, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর হাসিনা হায়দার চামেলী, দৈনিক মর্নিং গ্লোরি কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি মোঃ ফাইজুল হক গোলাপ, ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের ডাঃ মাহফুজা সুলতানা রোমা, গুজাদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ বাছির উদ্দিন বকুল, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের
আহ্বায়ক এনামূল হক সেলিম, আরডিও’র নির্বাহী পরিচালক রুবিনা আক্তার রুবি, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সদস্য এজাজুল হক, সংস্কৃতি কর্মী আতাউর হাসান দিনার প্রমুখ। এছাড়াও এনজিও প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার প্রতিনিধি, ছাত্রছাত্রী ও ওয়েপ এর কর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অবস্থান কর্মসূচিতে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে লাইসেন্সিং ব্যবস্থা
বাধ্যতামূলক করা হোক বিষয়ের উপর প্রশাসন এবং সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণপূর্বক বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সর্বত্র ভ্রাম্যমান তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অথচ অধিকাংশ বিক্রেতারই কোনো প্রকার ট্রেড লাইসেন্স নেই। এই বিক্রেতাদের জন্য লাইসেন্সিং ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের আশেপাশে ১০০ মিটারের মধ্যে এবং যত্রতত্র তামাকজাত দ্রব্য ক্রয় বিক্রয় বন্ধ হবে। এছাড়া বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন বন্ধের পাশাপাশি অপ্রাপ্তবয়স্ক বিক্রেতার সংখ্যা প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকার ৮.১-এ বলা হয়েছে-তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদনকারী ও বিক্রেতা উভয়কেই বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের আওতায় আসতে হবে। এছাড়া প্রতি বছর নির্দিষ্ট ফি প্রদান সাপেক্ষে আবেদনের মাধ্যমে উক্ত লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে।’ লাইসেন্সিং ব্যবস্থা
কার্যকর করার অর্থ শুধু বৈধতা প্রদান নয়। তামাক ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু কোম্পানির পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব বাতিল করার জন্য বিভিন্ন ধরণের মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো-১. ভ্রাম্যমান বিক্রেতারা কর্মহীন হয়ে অর্থ সংকটে ভুগবে ২. সরকার বড় অংকের রাজস্ব হারাবে। কিন্তু বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম যেমন-পদ্মা সেতু নির্মান, মেট্রোরেল নির্মানের
প্রেক্ষিতে অনেক মানুষ সাময়িক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তারা তাদের পেশা পরিবর্তন করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করতে সক্ষম হয়েছে। সুতরাং, তামাক কোম্পানি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর মাধ্যমে প্রচারিত এসকল তথ্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। একক সিগারেট ব্যবসা খুব কম ব্যক্তিরই আছে। লাইসেন্সিংয়ের বিধান বাধ্যতামূলক করায় যে তামাক কোম্পানির এত গাত্রদাহ তারাই তো এ সকল ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স ফি দিয়ে দিতে পারে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আয়ের দিক থেকে নিম্ন শ্রেণীর মধ্যে পড়ে রিক্সাচালকরা। এছাড়া ঢাকা মহানগরে চলাচল করা সকল রিক্সা ও এর চালকদের জন্য নির্দিষ্ট অর্থ প্রদানের ভিত্ততে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমনকি সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রয় করার জন্যও লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। আইন অমান্য করলে অর্থদন্ড এবং নিবন্ধন বাতিলের বিধান রাখা হয়েছে। তাহলে স্বাস্থ্যহানীকর তামাকজাত পণ্য ক্রয় বিক্রয়ে লাইসেন্সিং ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করায় বাধা কোথায়? মূলত, কোম্পানিগুলো নিজেদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্তহওয়া থেকে বাঁচার জন্যই এমন মিথ্যা ও মনগড়া তথ্য প্রচার করছে।তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে লাইসেন্সিং ব্যবস্থা ইউরোপ, আমেরিকা এমনকি পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের অনেক রাজ্য এবং নেপালে অনেক পূর্বে চালু
হয়েছে। বর্তমানে ফিনল্যান্ড, হাঙ্গেরি, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে লাইসেন্সিং ব্যবস্থা কার্যকর রয়েছে এবং এর কার্যকারিতার প্রভাব ইতোমধ্যে এ সকল দেশে দেখা যাচ্ছে। ভ্রাম্যমান বিক্রয়ের জন্য তামাকজাত দ্রব্য ছাড়াও সবজি, মাছসহ আরো অনেক স্বাস্থ্যকর পণ্য বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব। তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতার জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হলে সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে এবং মনিটরিং কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.