এম এ হানিফ রানা,স্টাফ রিপোর্টারঃ গত ১০/১০/২০২২ ইং জিএমপি'র সদর থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, একজন ভুয়া পুলিশ সালনা বাজারের ওভার ব্রিজের নিচে অবস্থান করছে।উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে ২১:২০ ঘটিকায় সদর থানার একটি চৌকস টিম সালনা বাজারের ময়মনসিংহ টু ঢাকাগামী রাস্তার আন্ডার পাস এর নিচে পশ্চিম পার্শ্ব এলাকা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়ে পালানোর সময়
১. মোঃ রুবেল রানা(২৬), পিতা-মৃত তোফাজ্জল হোসেন, মাতা-রহিমা খাতুন, স্থায়ী সাং-ফটিয়ামারী, থানা-ঘাটাইল, জেলা-টাঙ্গাইল বর্তমানে-সাং-কলমেশ্বর (জনৈক মোস্তফার বাড়ীর ৪র্থ তলা রুম নং-১০ এর ভাড়াটিয়া), থানা-গাছা, জিএমপি, গাজীপুরকে গ্রেফতার করা হয়।
এসময় ধৃত আসামীর দেহ তল্লাশীকালে তার প্যান্টের সাথে ঝুলানো অবস্থায় ১টি প্লাষ্টিক কার্ডে ভুয়া পুলিশ লেখা আইডি কার্ড (যেখানে রুবেল নামসহ হুবহু পুলিশের আই ডি কার্ডের মত যাবতীয় তথ্যাদি আছে), ১টি কালো রংয়ের ওয়াকিটকি, ২টি আলাদা কালো এ্যান্টিনা, ০৬টি বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড,০৭ টি বিভিন্ন অপারেটর এর সীম, ০১ টি iphone 13, পুলিশের ইউনিফর্ম পরিহিত পাসপোর্ট সাইজের ছবি, ১টি বাংলাদেশ পুলিশ লেখা নীল রংয়ের নোট বুক উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে ধৃত আসামীকে নিয়ে তার ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে ১টি পুলিশের বেল্ট, ১টি খেলনা পিস্তল ও ০১টি পিস্তলের কভার,২টি পুলিশ লেখা সাদা খাম (যেখানে Formed Police Unit , Bangaldesh Police লেখা আছে), ১টি কম্পিউটার, ০২ টি জাল সার্টিফিকেট (বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড, ঢাকা কর্তৃক দাখিল পরীক্ষার সনদ, যেখানে আরিফ হাসান নাম লেখা আছে, এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড, ঢাকা কর্তৃক আলীম পরীক্ষার সনদ, যেখানে আরিফ হাসান নাম লেখা আছে) উদ্ধার করা হয়।
ধৃত আসামীর দেয়া তথ্য মতে আশুলিয়া থানাধীন পশ্চিম জিরাবো হারিজ মেম্বার এর মার্কেটের ফাইজা স্টুডিওতে অভিযান পরিচালনা করে, বিভিন্ন ভুয়া আইডি সংক্রান্তে ফাইল সম্বলিত ০২ টি হার্ডডিস্ক সংযুক্ত সিপিইউ সহ
২.মোঃ তুষার ইসলাম (৩৭), পিতা-মোঃ
জব্বার মালিথা, মাতা-মোছাঃ হাসিয়া খাতুন, সাং-শোড়াতলা, থানা-হরিনাকুন্ডু, জেলা-ঝিনাইদহ, বর্তমানে সাং-আড়াগাও জিরাবো কাঠগড়া(মোঃ আতাউর রহমান এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া), থানা-আশুলিয়া, জেলা-ঢাকাকে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এই চক্রের আরো দুই সদস্য
৩. মোঃ সবুজ মোল্লা (৩৪), পিতা-মোঃ জাহাঙ্গীর মোল্লা, মাতা-মোছাঃ রেহেনা বেগম, সাং-অশোকসেন, থানা-
আগৈলঝাড়া, জেলা-বরিশাল বর্তমানে সাং-উত্তর গাজীরচট ( মোঃ আতাউর রহমান এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া), থানা-আশুলিয়া, জেলা-ঢাকা এবং
৪. মোঃ খায়রুল ইসলাম (৩১) পিতা-মোঃ জহিরুল হক, মাতা-মোছাঃ খাদিজা বেগম, সাং-দিগলগ্রাম, থানা-ভোদা, জেলা-পঞ্চগড়, বর্তমানে সাং-উত্তর গাজীরচট (বাদল ভূঁইয়া এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া), থানা-আশুলিয়া, জেলা-ঢাকাদের গ্রেফতার করা হয়।
আসামীদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, যে সকল এলাকায় গার্মেন্টেস শ্রমিকদের মাসের একটি নির্দিষ্ট দিনে এটিএম কার্ডের মাধ্যমে বেতন হয় সে সকল এলাকায় তারা দীর্ঘদিন যাবৎ ভুয়া পুলিশ পরিচয় দিয়ে পুলিশের নকল আইডি কার্ড ও ওয়াকিটকি প্রদর্শন করে বিভিন্ন এটিএম বুথের সামনে অবস্থান করতো এবং এসময় বেতন গ্রহণকারী শ্রমিকগণ এটিএম বুথের সামনে এসে বেতন উত্তোলনের চেষ্টা করলে তারা নিজ থেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে বেতন উত্তোলনে সহায়তা করার জন্য এগিয়ে যেতো। চক্রটি, বেতন গ্রহণকারী শ্রমিকের কাছ থেকে তার এটিএম কার্ডটি নিয়ে কার্ড না প্রবেশ করিয়েই পাসওয়ার্ড জিজ্ঞাসা করে পাসওয়ার্ড জেনে নিতো। তারপর সুকৌশলে একই ব্যাংকের অচল কার্ড প্রবেশ করাতো। কার্ডটি এটিএম বুথে আটকে যাওয়ার পর শ্রমিকের এটিএম কার্ডটি কৌশলে পকেটে রেখে দ্রুত অন্য বুথে গিয়ে সকল টাকা উঠিয়ে নিতো। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হতো।
উল্লেখ্য যে আসামী রুবেল রানা পুলিশ পরিচয় দিয়ে ০৪ টি বিয়ে করেছে৷ এছাড়াও চক্রটি পুলিশের পোশাক পরিহিত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রদর্শন করে পুলিশ অফিসার সেজে মেয়েদের সাথে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে তাদের সাথে শারীরিক মেলামেশা করে গোপনে ভিডিও করে রাখতো। পরবর্তীতে সেই ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করতো। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে৷
এই ঘটনায় সদর থানায় মামলা রুজু হয়েছে।
পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের নিদের্শনা অনুযায়ী সকল প্রকার অপরাধজনক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে৷
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.