সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রামঃ কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নদী বিচ্ছিন্ন নারায়ণপুর ইউনিয়নে ইব্রাহিম আলী ও রেহানা বেগম নামের এক দম্পতির পালন করা দেশি প্রজাতির একটি পাতি হাঁস পরপর দুদিন দুটি কালো ডিম দিয়েছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই ডিম দেখতে প্রতিদিন তাদের বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন এলাকার মানুষ। প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, জেলায় কোনও হাঁসের এ ধরনের ডিম দেওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম- যা জেনেটিক কারণে হয়ে থাকতে পারে।
ইব্রাহিম নারায়ণপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী পূর্ব নারায়ণপুর পরামানিক পাড়ার বাহার আলীর ছেলে। তিনি কুড়িগ্রাম মজিদা কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। তার স্ত্রী রেহানা বেগমও স্নাতক শ্রেণির শিক্ষার্থী। লেখাপড়ার পাশাপাশি তারা বাড়িতে কৃষি কাজ ও হাঁস পালন করেন। ছয় মাস আগে রেহানার বাবার বাড়ি থেকে পাঁচটি হাঁস উপহার পান এই দম্পতি। ছয় মাস প্রতিপালন করার পর শনিবার (২৯ অক্টোবর) একটি হাঁস কালো ডিম দেয়। রবিবার আরেকটি কালো ডিম দেয় হাঁসটি। খবর ছড়িয়ে পড়লে দূরদূরান্ত থেকে হাঁসের কালো ডিম দেখতে বাড়িতে ছুটে আসেন উৎসুক মানুষ। তবে সোমবার হাঁসটি কোনও ডিম দেয়নি বলে জানা গেছে।
ইব্রাহিম জানান, ছয় মাস আগে উপহার পাওয়া পাঁচটি দেশি প্রজাতির পাতি হাঁসের মধ্যে একটি পুরুষ হাঁস। বাকি চারটি স্ত্রী হাঁস। এদের দুটি কালো রং এর স্ত্রী হাঁস রয়েছে। কালো রঙের স্ত্রী হাঁস দুটির মধ্যে একটি হাঁস কালো ডিম দিয়েছে।
তিনি জানান, তার অনুপস্থিতিতে তার স্ত্রী রেহানা বেগম হাঁসগুলোর দেখাশোনা করেন। হাঁসগুলোকে স্বাভাবিক খাবার দেওয়া হয় এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে লালন-পালন করা হয়।
ইব্রাহিম আরও বলেন, ‘শনিবার সকালে হাঁসের ঘরের দরজা খুলে দিলে হাঁসগুলো বের হয়ে যায়। এ সময় হাঁসের ঘরের ভেতর একটি কালো ডিম দেখি। প্রথমে ডিমটি দেখে ভড়কে যাই। পরে বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের ডাকি এবং ডিমটি বের করে আনি। রবিবার সকালে হাঁসটি আরেকটি কালো ডিম পাড়ে। এই খবরে প্রতিবেশী থেকে শুরু করে দূরদূরান্তের মানুষ এক নজর কালো রঙের ডিম দেখতে আমার বাড়িতে আসছেন।’
ইব্রাহিমের বড় ভাই আব্দুল মজিদ বলেন, ‘এমন ডিম দেখে অবাক হয়েছি। এর আগে এমন ডিম দেখিনি।’
প্রতিবেশী আব্দুল আজিজ বলেন, ‘হাঁসটি দুইটা ডিম পেড়েছে। দুটোই কালো রঙের। আমরা এমন ডিম আগে দেখিনি।’
নাগেশ্বরী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আশিকুজ্জামান বলেন, ‘নারায়ণপুরে পাতি হাঁসের কালো ডিম পাড়ার সংবাদটি শুনেছি। এটি একটি বিরল ঘটনা। এটা অস্বাভাবিক বিষয়। কোনও কারণে হাঁসের জরায়ুতে কোনও ইনফেকশন থাকার করণে কিংবা ডিম পরিপক্ব হতে যে পরিমাণ পিগমেন্টের দরকার সে পরিমাণ পিগমেন্টের অনুপস্থিতির কারণে এমনটা হয়ে থাকতে পারে।’
একই মত দিয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ইউনুস আলী। তিনি বলেন, ‘খবরটি শুনেছি। এ ধরনের ঘটনা এই জেলায় এটাই প্রথম বলে জেনেছি। জেনেটিক কারণে ডিমের রঙ এমনটা হয়ে থাকতে পারে। পরে আবার স্বাভাবিক রঙের ডিমও আসতে পারে। অন্তত এক সপ্তাহ এটি পর্যবেক্ষণে রাখলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে।’
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.