মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ ঠাকুরগাঁও জেলার আখ চাষে ফের মনোযোগী হচ্ছে কৃষকরা। চিনিকল বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় সেখানকার কৃষকরা আখ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেও গত কয়েক বছরে সেটি বাড়ছে। এবার দ্বিগুণ আখ চাষ হয়েছে এ জেলায়। ঠাকুরগাঁও চিনিকলের মহা-ব্যবস্থাপক (কৃষি) আবু রায়হান জানান, ২০২০-২১ মাড়াই মৌসুমে দেশের ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ৬টি বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। সে সময় চিনিকলটি বন্ধের শঙ্কায় আখ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন কৃষকরা। তবে আমরা কৃষকদের আখ চাষে ফেরাতে সক্ষম হচ্ছি। গত বছরের চেয়ে এবার দ্বিগুণ আখ চাষ করেছেন চাষিরা।
কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, চিনিকলে ২০১৮-১৯ মাড়াই মৌসুমে জেলার চাষিদের ৬১ হাজার ৭৬০ মে. টন আখ মাড়াই হয়। চিনিকল বন্ধ হবে এমন গুঞ্জনে পরের মাড়াই মৌসুমে চাষ কমে মাড়াই হয়েছিল ৫৩ হাজার ৮৭৯ টন। ২০২০-২১ মাড়াই মৌসুমে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও সেতাবগঞ্জ তিন মিলের আখ মাড়াই হয় ঠাকুরগাঁও চিনি কলে। এ মৌসুমে চিনিকলে আখ মাড়াই হয় এক লাখ ১৩ টন আখ। মাড়াই মৌসুমে জেলার ৫০ হাজার টন আখ মাড়াই হয়েছিল চিনিকলে। ২০২১-২০২২ মাড়াই মৌসুমে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁওয়ের ৫৭ হাজার ৮৩৪ টন আখ মাড়াই হয় চিনিকলে। গত বছর জেলার আখ চাষিরা উৎপাদন করেছিল ৩৬ হাজার টন আখ। ঠাকুরগাঁও চিনি কলের মহা-ব্যবস্থাপক (কৃষি) আবু রায়হান বলেন, চিনিকলের নিজস্ব জমি রয়েছে ৭২৭ হেক্টর। এছাড়াও বর্তমানে জেলার প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে আখ উৎপাদন করছে তিন হাজার কৃষক। চার হাজার হেক্টর জমিতে আখ চাষ হলেই সুদিন ফিরবে চিনিকলটির।
চিলারং ইউনিয়নের কৃষক সলেমান আলী বলেন, একবিঘা জমিতে আখ রোপণের সময় খরচ হয় আট হাজার টাকা। এছাড়াও চিনিকলে মাড়াইয়ের জন্য পাঠাতে খরচ হয় ৩০-৩৫ হাজার টাকা। যত্ন নিয়ে আখের ফলন ভালো হয়ে প্রায় লাখ টাকায় বিক্রি হয় আখ। ২০২০ সালে ২৯ সেপ্টেম্বর চিনিশিল্প বাঁচাতে ৭ দফা দাবি জানিয়ে আন্দোলনে নেমেছিল জেলাবাসী। সে আন্দোলনের আহ্বায়ক মাহাবুব আলম রুবেল বলেন, বাজারে চিনির দাম ঊর্ধ্বগতি। আখের উৎপাদন বাড়িয়ে এ চিনিকলগুলো বাঁচিয়ে রাখতে না পারলে আমাদের পুরোপুরিভাবে আমদানি নির্ভর হয়ে পড়তে হবে। ঠাকুরগাঁও চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান কবির বলেন, কৃষকদের বোঝানোর চেষ্টা করছি আখ উৎপাদন করে তারা লাভবান হতে পারবেন৷ আমরা কৃষকদের সার কীটনাশকের যোগান দিয়ে সহযোগিতা করছি। কৃষকরা আখ চাষে ঝুঁকছেন।