আলমগীর ইসলামাবাদী,চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ তাহফিজুল কুরআন সংস্থার উদ্যোগে ৪৩তম পটিয়া হিফজুল কুরআন প্রতিযোগীতায় চট্টগ্রাম পাঁচলাইশ দারুল হিদায়া তাহফিজুল কুরআন মাদরাসার মেধাবী ছাত্র রহমতুল্লাহ বিন আলমগীর ইসলামাবাদীসহ ৭ জন মেধা তালিকায় উত্তির্ন হয়ে সম্মাননা সনদ ও আকর্ষনিয় পুরস্কার প্রদান করেছেন।
পরিস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ্ হাফিজাহুল্লাহ্, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামিয়া পটিয়ার শায়খুল হাদীস আল্লামা শাহ্ আহমদ উল্লাহ সাহেব হাফিজাহুল্লাহ্ সহ জামিয়ার শিক্ষক বৃন্দ। বিভিন্ন মাদরাসা থেকে আগত ছাত্র ও শিক্ষকবৃন্দের প্রতি আল্লামা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ্ হাফিজাহুল্লাহ্ নসিহত করেন
নবীদের উত্তরসূরি হিসেবে কুরআন- সুন্নাহর আলোকে জাতিকে নির্দেশনা দেয়া আলেম সমাজের দায়িত্ব ও কর্তব্য। কল্যাণের প্রতি আহ্বান জানানো ও অকল্যাণের পরিণতি সম্পর্কে সজাগ করতে আলেমদের স্বয়ং আল্লাহ ও মহানবী (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন। মানুষের ঈমান-আকিদার হেফাজত করা, মানুষকে পরকালমুখী করা, প্রচলিত শিরক-বিদআত ও কুসংস্কারসমূহ রদ করা এবং শরিয়তবিরোধী সব কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ভূমিকা পালনের শিক্ষার পাশাপাশি দেশপ্রেম এবং জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা ও ভালোবাসার শিক্ষা দেয়া আলেমদের অন্যতম জিম্মাদারী। তাই কোনো অবস্থাতেই আলেম সমাজের পক্ষে এ দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাঁরা বলেন, ইসলামী চিন্তাধারার অনুসারীদের মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারিত করতে হবে। একে অন্যকে অভিযুক্ত করার প্রবণতা পরিহার করে মতপার্থক্যের যে সব বিষয় রয়েছে সেগুলোকে সংলাপের মধ্য দিয়ে নিষ্পত্তি ও সংশোধন করা গেলে মুসলিম উম্মাহকে কার্যকর ঐক্যবদ্ধ ও স্বাতন্ত্র্যমণ্ডিত করে তোলা সম্ভব। ওবায়দুল্লাহ হামযাহ্ হাফিজাহুল্লাহ্ বলেন, উম্মাহর ক্রান্তিলগ্নে সব মুসলিমকে একত্রিত করার দায়বদ্ধতাকে বিশেষভাবে উপলব্ধি করতে হবে। সংযমের মাধ্যমে মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সাদৃশ্যের বন্ধনকে জোরদার করতে হবে এবং পরিত্যাগ করতে হবে শত্রুতা ও বিভাজনের প্রবণতা। একই সাথে চরমপন্থা, সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদের সকল রূপ প্রত্যাখ্যান করতে হবে এবং অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের সাথেও মুসলমানদের সর্বোত্তম পদ্ধতিতে সহযোগিতা করতে হবে।
চট্টগ্রাম পাঁচলাইশ দারুল হিদায়া তাহফিজুল কুরআন মাদরাসার মেধাবী প্রতিযোগী ছাত্ররা হলেন যতক্রমে ৩০পারা গ্রুপে মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বিন আলমগীর ইসলামাবাদী ১ম গ্রুপে ১ম বিভাগে উত্তির্ন,মোহাম্মদ হাসান মুহাম্মাদ সাবিত ২য় বিভাগে উত্তির্ন,মুহাম্মদ সিফাত ৩য় বিভাগে উত্তির্ন, মুহাম্মদ মাহফুজ ২য় বিভাগে উত্তির্ন,মুহাম্মাদ জুনাইদুল ইসলাম ২য় বিভাগে উত্তির্ন,মুহাম্মদ হাম্মাদ ৩য় বিভাগে উত্তির্ন,মুহাম্মাদ সাকিবুল হাসান জাওয়াদ১ম গ্রুপে ২য় বিভাগে উত্তীর্ণ, মুহাম্মাদ ফাহাদ১ম গ্রুপে ২য় বিভাগে উত্তীর্ণ, মুহাম্মাদ ফাহিম মুনতাসির ২য় গ্রুপে ২য় বিভাগে উত্তীর্ণ।
১৮,১৯,২০ জানুয়ারি ২০২৩ খৃষ্টাব্দ (বুধ, বৃহস্পতি ও জুমাবার) বাংলাদেশ তাহফীজুল কুরআন সংস্থার উদ্যোগে ৩ দিনব্যাপী ৪৩তম হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত ৬৩৪ টি মাদরাসা থেকে প্রায় ১২৬৮ জন প্রতিযোগী অংশ গ্রহণ করেছে।
হল বিন্যাস :
তিনটি হলে ছাত্রদের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
(১) শিক্ষা ভবন ৩য় তলা (সম্মেলন কক্ষ), সেখানে ৩০ পারা গ্রুপের ১নং সিরিয়াল থেকে ৮৩৯ সিরিয়াল পর্যন্ত প্রতিযোগীদের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
(২) আল-জামিয়ার জামে মসজিদ ৩য় তলা, সেখানে ১৫ পারা গ্রুপের ২ নং সিরিয়াল থেকে ৮৪১ সিরিয়াল পর্যন্ত প্রতিযোগীদের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
(৩) জামাতে শাশুমের দরসেগাহ, সেখানে ৩০ পারা গ্রুপের ৮৪২ নং সিরিয়াল থেকে ১২৬৮ এবং ১৫ পারা গ্রুপের ৮৪৩ সিরিয়াল থেকে ১২৬৬ পর্যন্ত প্রতিযোগীদের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।বুধবার সকাল ৮ঘটিকা থেকে প্রত্যেক হলের প্রতিযোগিতা আরম্ভ হয়েছে।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদেরকে পুরস্কার ও সনদ প্রদানের পাশাপাশি সকল অংশগ্রহণকারীদেরকে সান্ত্বনা পুরস্কার এবং তাদের শিক্ষকমণ্ডলীকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।